মানুষ কেন দুঃখের গান পছন্দ করেন - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 9 October 2024

মানুষ কেন দুঃখের গান পছন্দ করেন

 


প্রদীপ ভট্টাচার্য
, কলকাতা, ৯ অক্টোবর: গান শুনতে ভালোবাসেন প্রায় সকলেই। যদিও কারও পছন্দ পপ, কারও রোমান্টিক কিংবা স্যাড বা কষ্টের গান। তবে জানলে অবাক হবেন, বেশিরভাগ মানুষই দুঃখের গান বা স্যাড মিউজিক শুনতে বেশি পছন্দ করেন।


গবেষণা বলছে, বেশিরভাগ মানুষ মন খারাপের সময়ই স্যাড মিউজিক বা দুঃখের গান শুনতে পছন্দ করেন। যা পরবর্তী সময়ে তাদেরকে আরও বাস্তববাদী হয়ে উঠতে সাহায্য করে।


মেজাজ উন্নত করতে কেন দুঃখের গানগুলোই সাহায্য করে?


আসলে কোনও গানের শব্দগুলো যখন কারো অভিজ্ঞতার কথা বলে, তখন সেটি শুনলে তাৎক্ষণিকভাবে যে কেউই অনুভব করেন যে, তিনি একা নন। আরও অনেকেই এমন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। এসব ভেবে ইতিবাচক অনুভূতি জাগ্রত হয় মনে।


বিজ্ঞান কী বলছে?


দুঃখের গান শোনার মাধ্যমে মানসিক সুস্থতা মেলে, এমনটিই জানাচ্ছে বেশ কিছু গবেষণা। মিউজিক থেরাপি মানসিক প্রশান্তি বাড়ায়, এমনকি মন-মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।


স্যাড মিউজিক শুনলে কী কী উপকার মেলে?


নস্টালজিক করে তোলে:

গবেষণায় দেখা গেছে, দুঃখের গান সবাইকে পুরোনো স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। নস্টালজিক স্মৃতি মনে পড়ায় মেজাজ উন্নত হয়। বিশেষ করে যদি স্মৃতিগুলো জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ মুহূর্তগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত হয়।


প্রোলেকটিন হরমোন বাড়ায়:

মানুষের দুঃখের সংগীত উপভোগ করার আরেকটি কারণ হলো প্রোলেকটিন হরমোন। স্তন্যদানের সঙ্গে এর গভীর সংযোগ ছাড়াও প্রোলেকটিনের বিভিন্ন মানসিক প্রভাবও আছে। এটি পুরুষ ও নারী উভয়ের মধ্যেই নির্গত হয়।


দুঃখ বা অন্যান্য চাপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এর বেদনানাশক প্রভাব আমাদের ব্যথা কমায়। আপনি যখন শোকগ্রস্ত থাকেন, তখন প্রোলেকটিন প্রশান্তি ও সান্ত্বনার অনুভূতি তৈরি করে। দুঃখের গান প্রোলেকটিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়। ফলে মানসিক কষ্ট ও চাপ থেকে সহজেই মুক্ত হওয়া যায়।


উদ্বেগ কমায়:

সংগীতের মাধ্যমে উদ্বেগজনক আবেগ দূর হয়। এর মাধ্যমে রাগ ও দুঃখের মতো নেতিবাচক আবেগগুলো দূর করা যায়। যখন কেউ দুঃখের গান শুনে কাঁদেন, তখন হতাশা ও নেতিবাচক অনুভূতিগুলো মুছে যায়।


সঙ্গ দেয়: কেউ যখন প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে থাকে বা একাকিত্ব অনুভব করে, তখন মিউজিক তাকে সঙ্গ দেয়। দুঃখের গানকে কাল্পনিক বন্ধু হিসেবে কষ্টের সময় অনুভব করেন অনেকেই। গান শোনার মাধ্যমে আবেগ, মেজাজ, স্মৃতি ও মনোযোগ প্রভাবিত হয় বলে প্রমাণিত। এ কারণে মানসিক প্রশান্তি পেতে মিউজিক থেরাপি বেশ কার্যকরী।


ওষুধের চেয়েও কার্যকরী:

সংগীত আবার ওষুধের তুলনায় কম ব্যয়বহুল, শরীরের জন্য ভালো ও এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।


এক গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের একাংশকে গান শোনার ও অন্যদের ওষুধ দেওয়া হয়েছিল মানসিক চাপের জন্য। পরে দেখা যায়, যে রোগীরা গান শোনেন, তাদের উদ্বেগ কম ছিল। ওষুধ সেবনকারীদের তুলনায় কম কর্টিসল ছিল।


মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করা যায়:

গানের কথা ও সুর সবাইকেই প্রভাবিত করে। বিশেষ করে দুঃখের গান শোনার মাধ্যমে মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। স্যাড মিউজিক শ্রোতাকে কষ্টদায়ক পরিস্থিতি (বিচ্ছেদ, মৃত্যু ইত্যাদি) থেকে দূরে সরে যেতে ও এর পরিবর্তে গানের দিকে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad