বারাসত পৌরসভার চেয়ারম্যান বদলের চর্চা তুঙ্গে - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday, 22 November 2024

বারাসত পৌরসভার চেয়ারম্যান বদলের চর্চা তুঙ্গে



বারাসত: তৃণমূলের বদলে চর্চায় বারাসত পুরসভা। গেল লোকসভা নির্বাচনে শহর অঞ্চলে ভোট গ্রামের তুলনায় কম পাওয়া এবং বেশ কিছু পৌরসভা এলাকায় হারের ফলে রদ বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সূত্রের খবর ওই তালিকায় রয়েছে বারাসত পৌরসভার নামও। বর্তমান চেয়ারম্যান , ভাইস চেয়ারম্যান এবং টাউন প্রেসিডেন্ট বদল হওয়ার কথা ভাসছে দলের অন্দরে। উল্টো দিকে পদ টিকিয়ে রাখতে বর্তমানরা এবং পরিবর্তন হওয়া পদে বসতে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ।

তৃণমূল সূত্রের খবর, ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বারাসত পৌরসভা এলাকায় তৃণমূল লিড নিতে ব্যর্থ হওয়ায় বারাসত পৌরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায়, ভাইস চেয়ারম্যান তাপস দাশগুপ্ত ও টাউন সভাপতি অরুন ভৌমিককে সরানো হতে পারে। আড়াই বছর আগে পৌরসভা নির্বাচনে সুনীল মুখোপাধ্যায়কে সরিয়ে অশনি মুখোপাধ্যায়কে চেয়ারম্যান করা হয়। চেয়ারম্যান না করায় সুনীল মুখোপাধ্যায় পৌরসভার ভবনে একদিনও ঢোকেননি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির এক সদস্যের দাবি, বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান বদল হচ্ছেই। চেয়ারম্যান পদে ফেরানো হচ্ছে সুনীল মুখোপাধ্যায়কে। তৃণমূলের প্রভাবশালী ওই নেতার দাবি, বারাসাতে সুনীল মুখোপাধ্যায় ছাড়া চেয়ারম্যান করার মতো দ্বিতীয় আর কেউ বর্তমানে নেই। 

তৃণমূলের অপর একাংশের দাবি, অশনি মুখোপাধ্যায় কে আপাতত সরানো হচ্ছে না বলেই তাদের কাছে খবর। তাদের ব্যাখ্যা যে নেতৃত্ব সুনীল মুখোপাধ্যায়কে সরিয়ে অশনি মুখোপাধ্যায়কে চেয়ারম্যান করেছিল। সেই সুনীলকে ফের বসানো মানেই সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল তা প্রমাণ করা। 

তৃণমূলের একাধিক নেতার দাবি, চেয়ারম্যান পদ থেকে অশনিকে সরানোর জন্য যদি পৌরসভা এলাকায় লোকসভা নির্বাচনের ভোটের প্রাপ্তিকে মানদণ্ড করতে হয় তাহলে সেই দায়িত্ব প্রতিটি কাউন্সিলরের ঘাড়েও পড়ে। তাহলে আগামী পৌরসভা নির্বাচনে এই কাউন্সিলররা কি টিকিট পাবে না ? পাশাপাশি চেয়ারম্যান পথ থেকে সরানোয় সুনীল মুখোপাধ্যায় গত আড়াই বছরে একদিনও পৌরসভা ভবনে ঢোকেন নি । যার অর্থ দাঁড়ায় পদ না পেয়ে ক্ষুব্ধ তিনি। তাকেই যদি ফের চেয়ারম্যান করা হয় তাহলে দল ও সংগঠনে ভুল বার্তা যাবে। পরবর্তীকালে পদ না পাওয়ার কারণে জনপ্রতিনিধিদের যে কেউ পৌরসভা ভবনে সুনীলের মত আশা বন্ধ করে দিতে পারেন। 

তৃণমূল নেতাদের আরও যুক্তি,ইদানিং যেকোন স্তরের নেতা ও জনপ্রতিনিধিকে পথ থেকে সরানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ কাগজে ছাপিয়ে তা দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া, পোস্টারিং করা এবং সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল করা হচ্ছে। দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে পথ থেকে সরানো হচ্ছে তাদের। এসবের পিছনে রয়েছে এক বিরাট ষড়যন্ত্র। এ ধরনের ষড়যান্ত্রিক কৌশল শুরু হয়েছিল বাম আমলের শেষের দিকে। দলের একাংশের মদতে এসব পোস্টারিং হচ্ছে। আগামী দিনে সুনীল মুখার্জির মত পদ না পেয়ে পৌরসভায় না আসার কৌশল ছড়িয়ে পড়লে কি পরিনতি হতে পারে তাও নেতৃত্বকে বোঝা উচিত। 

অন্যদিকে চেয়ারম্যান বদল হতে পারে খবরে আলোচনার চর্চা শুরু হয়েছে নাগরিক সমাজেও।

২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদলের এক বছর আগে পৌরসভা নির্বাচনে বারাসত পৌরসভায় বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। চেয়ারম্যান করা হয়েছিল সুনীল মুখোপাধ্যায়কে। দেড়শো বছরের বেশি বয়সের বারাসত পৌরসভার ইতিহাসে এভাবে চেয়ারম্যান বদল হয়নি। বারাসতের সচেতন নাগরিক সমাজের একাংশের মতে, গত তিন দশকে বারাসত পৌরসভা এলাকা থেকে কোনও রাজনৈতিক দলে বলিষ্ঠ শিক্ষিত ভদ্র ও মার্জিত স্বভাবের নেতা তৈরি হয়নি। ব্রিটিশ শাসন আমলের পৌরসভায় মাঝপথে চেয়ারম্যান বদলের ইতিহাস নেই। এরকম ঘটনা না ঘটানোই কাম্য। 


তৃণমূল সূত্রের খবর, বর্তমান চেয়ারম্যানকে পদে বহাল রাখতে চাইছে প্রভাবশালী এক নেতা। আবার একাধিক প্রভাবশালী নেতারা চাইছেন বর্তমান চেয়ারম্যানকে। তারা চাইছে বদল হোক। অন্যদিকে পৌরসভার তরুন প্রজন্মের কাউন্সিলররা চাইছেন বদল করতে হলে প্রাক্তনকে না ফিরিয়ে নতুন কাউকে বসানো হোক। আবার কেউ কেউ চাইছেন , বর্তমান চেয়ারম্যানকে পদ থেকে না সরিয়ে রাখা হোক। সেক্ষেত্রে সামনের পৌরসভা নির্বাচনে চেয়ারম্যান হওয়ার দাবিদার হওয়া অনেকটাই সহজ হবে। এমন নানা ধরণের সমীকরণ দলের অন্দরে চলছে। 

এখন দেখার দলের আভ্যন্তরীণ লড়াইয়ে কোন পক্ষ শেষ হাসি হাসে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad