প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ২০ নভেম্বর: আমাদের নিত্যদিন ব্যবহার করা জিনিসের তালিকা কিছু কম নয়। বিশেষ করে অনেক মহিলাদের রূপসজ্জা বা সাজগোজ সংক্রান্ত বিভিন্ন জিনিসপত্র রয়েছে, যা তাঁরা নিত্যদিন ব্যবহার করে থাকেন। এর মধ্যে একটি হল হেয়ার ড্রায়ার, যা ভেজা চুল শুকানোর জন্য খুবই কার্যকরী। কিন্তু কী হবে, যদি এই প্রয়োজনীয় জিনিসটিই বড়সড় বিপত্তি ডেকে আনে! এমনই ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে কর্ণাটকে।
হেয়ার ড্রায়ার বিস্ফোরণে দুটো হাতই হারালেন প্রয়াত প্রাক্তন সেনার স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের বাগালকোটের ইলকাল শহরে। হেয়ার ড্রায়ার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন প্রয়াত প্রাক্তন সেনার স্ত্রী বসম্মা ইয়ারানাল। বিস্ফোরণে তার দুই হাতই কেটে যায়। আঙুলও ভেঙে গেছে। বিস্ফোরণের জেরে ঘরে চারিদিকে রক্ত ছড়িয়ে পড়ে।
ক্যুরিয়ারে হেয়ার ড্রায়ার পাঠানো হয়েছিল
প্রাক্তন সৈনিক পাপান্না ২০১৭ সালে জম্মু-কাশ্মীরে শর্ট সার্কিটের কারণে মৃত্যু হয়। তথ্য অনুযায়ী, হেয়ার ড্রায়ারের পার্সেলটি ছিল শশীকলা নামে এক মহিলার নামে, যাঁর স্বামীও একজন প্রাক্তন সেনা ছিলেন এবং তিনিও গত হয়েছেন। ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানো এই পার্সেলে শশিকলার নাম ও মোবাইল নম্বর ছিল। ক্যুরিয়ার সার্ভিসের লোক যখন তাঁর সাথে যোগাযোগ করেন, তখন শশীকলা শহরের বাইরে ছিলেন। এমতাবস্থায় শশীকলা বসম্মাকে পার্সেলটি নিয়ে সেটি খুলে চেক করতে বলেন।
বসাম্মা পার্সেলটি পাওয়ার পর খুললে তাতে একটি হেয়ার ড্রায়ার ছিল। সেই সময়ে, এক প্রতিবেশী বসম্মাকে এটি চালু করে দেখাতে বলেন। আর বসাম্মা যখনই এটিকে প্লাগ ইন করে চালু করেন, সাথে সাথে হেয়ার ড্রায়ারটি বিস্ফোরিত হয়।
হেয়ার ড্রায়ার তৈরি হয়েছিল বিশাখাপত্তনমে
হেয়ার ড্রায়ার বিস্ফোরণে বাসম্মা গুরুতর আহত হন। তাঁকে অবিলম্বে ইলকালের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তাঁর দুটো হাতই কাটা পড়ে। সেইসঙ্গে ইলকাল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এই ঘটনায় পার্সেল প্রেরককে নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
এই বিষয়ে, বাগালকোট এসপি অমরনাথ রেড্ডি বলেন যে, কে অর্ডার দিয়েছে, কে পেমেন্ট করেছে এবং কীভাবে হেয়ার ড্রায়ার তার গন্তব্যে পৌঁছেছে তা তদন্ত করছে পুলিশ। হেয়ার ড্রায়ারটি বিশাখাপত্তনমে তৈরি করা হয়েছিল এবং বাগলকোট থেকে পাঠানো হয়েছিল।
বাগলকোট এসপি অমরনাথ রেড্ডি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এই ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। শুরুতে শশীকলা দাবী করেছিলেন তিনি জিনিসটি কিনেছিলেন। যদিও মামলা দায়েরের পরে তিনি বলেন, এটি তিনি অর্ডার করেননি। এটাও হতে পারে যে, এফআইআর দায়ের হওয়ায় তিনি ভয় পেয়েছেন। আমরা ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করছি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা ইলেকট্রকাল ইনস্পেক্টরের মতামতও চেয়েছি, যিনি জানান, ডিভাইসটি ব্যবহার করার সময় ম্যানুয়াল মানা হয়নি এবং ভোল্টেজও প্রয়োজনের তুলনায় কম ছিল। আমরা তদন্ত করছি, সত্যিই কোনও ত্রুটি ছিল কিনা। ক্যুরিয়ার কোম্পানিতেও তদন্ত করা হচ্ছে। যেই হেয়ার ড্রায়ারের কথা বলা হচ্ছে, সেটা চাইনিজ-মি কেমে হেয়ার ড্রায়ার ছিল।"
No comments:
Post a Comment