আধার কার্ড নম্বর এবং আঙুলের ছাপের তথ্যের সাহায্যে, গ্রাহকদের অজান্তেই তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। এমনই এক সাইবার জালিয়াতির ঘটনা সামনে এসেছে হাওড়ায়। এ নিয়ে হুঁশ হারিয়ে ফেলেছে হাওড়া পুলিশ। হাওড়া সাইবার ক্রাইম পুলিশ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ পেয়েছে, কিন্তু আধার কার্ডের মতো নিরাপদ পরিচয়পত্র ব্যবহার করে কীভাবে প্রতারণা হচ্ছে তা জানতে পারেনি পুলিশ। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর বলেন, 'এই বিষয়টি আমাদের বিশেষ ভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এটিএম কার্ড ছাড়া গ্রাহকদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বরের (পিন) সাহায্যে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা ও পাঠানোর ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে সরকার। তার ঠিক আগে আধার কার্ডে আঙুলের ছাপের তথ্য ব্যবহার করে গ্রাহকের অজান্তেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার ঘটনায় আলোড়ন সাইবার ক্রাইম বিভাগে।
জানা গিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ আগে লিলুয়ার বেলগাছিয়া জি রোডের বাসিন্দা শ্রীকান্ত ঘোষের দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে 20 হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায়। তিনি বলেছিলেন যে তার আধার কার্ড ব্যবহার করে দুটি আলাদা অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা হয়েছিল। যখন তিনি উভয় ব্যাঙ্কের সাথে যোগাযোগ করেন, তখন তাকে বলা হয় যে কেউ তার আধার কার্ডে আঙুলের ছাপের তথ্য ব্যবহার করে এটি করেছে। নিয়ম অনুযায়ী যুবকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আধার কার্ডের সঙ্গে লিঙ্ক করা হয়েছে। যুবক বলেছেন, "ব্যাঙ্কের মতে, ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা বা আধার কার্ডে আঙুলের ছাপের তথ্য ব্যবহার করে টাকা তোলা যায়।"
এ ক্ষেত্রে প্রতারকরা কীভাবে এভাবে টাকা হাতিয়ে নিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদের কি আমার আঙুলের ছাপ আছে? তারা কোনও অপরাধ করলে এবং সেখানে আমার আঙুলের ছাপ রেখে গেলে আমি বিপদে পড়ব। তবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দুই ব্যাংক আধিকারিক মন্তব্য করতে রাজি হননি। ওই যুবক জানান, ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় তার ইমেইলে একটি মেসেজ আসে। এটি পড়ে প্রতারণার কথা জানা গেল।
হাওড়া সিটি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ডিভিশনের এক ঊর্ধ্বতন আধিকারিক জানিয়েছেন, তাঁরা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কিং আধিকারিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, ব্যাঙ্কগুলির কোনও ত্রুটির কারণেই এমন জালিয়াতি হচ্ছে। এর আগে উত্তরপ্রদেশে গোয়েন্দা পুলিশ একটি গ্যাংকে গ্রেপ্তার করেছিল, যারা বিভিন্ন ব্যক্তির আধার কার্ড ব্যবহার করেছে, তারা এমন প্রতারণা করেছে। হাওড়ার সাম্প্রতিক ঘটনার সঙ্গে একে অপরের কোনও সম্পর্ক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
No comments:
Post a Comment