আজকের পৃথিবীতে যেখানে প্রায় প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই বিবাহ বিচ্ছেদ, পরকীয়ায় জড়িয়ে খুন, সেখানে মধ্যপ্রদেশ থেকে প্রকাশ্যে এল স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার এক অনন্য কাহিনী। চিকিৎসক স্বামীর মৃত্যুর এক ঘন্টা পর সহকারী অধ্যাপক স্ত্রী আত্মহত্যা করে বসেন। পরাগ পাঠক (MDS), ৪৭, চুনা ভাট্টির বাসিন্দা, ভাভা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। ২৮ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ডাঃ পাঠকের শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি হয়। প্রীতি ঝারিয়া (৪৪) তার স্বামীকে জল দেন এবং তাকে আরেরা কলোনীর ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরীক্ষা করে দেখা যায়, ব্রেন হেমারেজের কারণে চিকিৎসকের অবস্থার অবনতি হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তার অস্ত্রোপচার করা হয় এবং ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।
কিন্তু ২ মে রাতে মারা যান ডাঃ পরাগ। স্বামীর মৃত্যুর খবর স্ত্রী প্রীতি ঝরিয়ার কাছে আসতেই তিনি শক হয়ে যান। হাসপাতালে উপস্থিত চিকিৎসককে প্রীতি বলেন, তার এখন বেঁচে থাকার কোনও মানেই নেই। এই পৃথিবীতে তাঁর কেউ নেই এবং তিনি এখন ভদভদা সেতুতে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন। এই বলে তাঁর গাড়ি নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান।
হাসপাতালে পৌঁছে ডাক্তার পুরো ব্যাপারটা প্রীতির ভাইদের জানালে সবাই দ্রুত তার পিছনে দৌড়ে যায়। কিন্তু ততক্ষণে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন প্রীতি। পরে ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয় এবং ডুবুরিদের সহায়তায় তাঁর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে উভয়ের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর মঙ্গলবার স্বামী-স্ত্রীর দেহ একসঙ্গে সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
জব্বলপুরের বাসিন্দা প্রীতি ভোপালের নরেলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। তারা চার বছর বিবাহিত ছিল, কিন্ত তাঁদের কোনও সন্তান হয়নি। মৃত চিকিৎসক পরাগের প্রয়াত বাবা এসডিও ছিলেন। তার মা-ও ডাক্তার। পরাগের মা শোভা পাঠক একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি ছেলে-বৌমার সঙ্গেই থাকতেন। ছেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি পুত্রবধূকে নিয়ে হাসপাতালে থাকতেন। ছেলের মৃত্যুর পর তিনিও হাসপাতালে কাঁদতে থাকেন। এদিকে বৌমাও গাড়ি নিয়ে চলে যায়। তার কিছুক্ষণ পর বৌমারও মৃত্যুর খবর আসে।
No comments:
Post a Comment