দিল্লীর বসন্ত বিহারে ট্রিপল আত্মহত্যার ঘটনায় সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আত্মহত্যার আগে মা ও তার দুই মেয়ে ২০৭ নম্বরের ফ্ল্যাটটিকে গ্যাস চেম্বারে পরিণত করেছিলেন। বাড়ির ভিতরের সমস্ত স্কাইলাইটগুলি পলিথিন দিয়ে প্যাক করা ছিল। আসলে মা ও দুই মেয়ে আত্মহত্যার ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা করে পরিকল্পিতভাবে ঘরকে গ্যাস চেম্বারে পরিণত করে, পরে আত্মহত্যা করে। এরপর একটি চিরকুট রেখে যান, যাতে লেখা ছিল, 'ঘরের ভেতরে বিষাক্ত গ্যাস রয়েছে, দরজা খুললে লাইটার বা দেশলাই জ্বালাবেন না।'
এক বছর আগেও পরিবার আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু সফল হয়নি। তাই এবার ভাড়াটিয়াকেও অজুহাতে সরিয়ে দেয়, যাতে তার কোনও ক্ষতি না হয়। মৃত্যুর সমস্ত আইটেম অনলাইনে বুক করা হয়েছিল। এভাবে বাড়িটিকে গ্যাস চেম্বার করা হয়। জানালা সম্পূর্ণভাবে ফয়েল পেপার দিয়ে টেপ করা হয়েছিল।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাত ৮টার দিকে পুলিশ খবর পায় বসন্ত অ্যাপার্টমেন্টের ২০৭ নম্বর ফ্ল্যাটের গেট ভিতর থেকে তালাবদ্ধ। ভিতরের বাসিন্দারা গেট খুলছে না, পরে এসএইচও তার দল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পুলিশ বাড়িতে ঢুকলে একটি চিরকুট পাওয়া যায়, যাতে লেখা ছিল- "ঘরের ভেতরে বিষাক্ত গ্যাস রয়েছে, দরজা খুললে লাইটার বা দেশলাই জ্বালাবেন না।" আসলে, এই নোটটি লেখা হয়েছিল যাতে মৃত্যুর পরে পুলিশ যখন ভিতরে প্রবেশ করে, তখন কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে।
দিল্লী পুলিশ জানায়, এই পরিবারের প্রধান উমেশ চন্দ্র শ্রীবাস্তব পেশায় হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ করতেন, বাড়িতে তার অসুস্থ স্ত্রী ও দুই মেয়ে ছিল, কিন্তু প্রায় এক বছর আগে করোনায় স্বামীর মৃত্যুর পর। স্ত্রী ও দুই মেয়েই হতাশায় ভুগছিল। পুলিশের দল দেখতে পায়, বাড়ির গেট ও সব জানালা ভিতর থেকে বন্ধ। পুলিশ গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। যেখানে ঘরের ভেতরে তিনটি ফায়ারপ্লেস জ্বালানো এবং গ্যাস সিলিন্ডার খোলা ছিল।
একই সময়ে, সেই ভয়ঙ্কর সুইসাইড নোটটি বাড়ির দেওয়ালে সাঁটানো ছিল। পুলিশের দল ঘরের ভেতরের কক্ষগুলো পরীক্ষা করলে সেখানে তিনটি দেহ পান। তিনটি মরদেহ একই ঘরে। নিহতদের নাম মা মঞ্জু এবং মেয়ে আশিকা ও অঙ্কু। পুলিশ দেহ তিনটি উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, মঞ্জুর স্বামী ২০২১ সালে করোনায় মারা যান। এরপর থেকে পুরো পরিবারই হতাশায় ভুগছিল। বর্তমানে ফরেনসিক দল বাড়িটি পরিদর্শন করছে এবং মামলার তদন্ত চলছে।
No comments:
Post a Comment