চিকিৎসা করাতে ডাক্তারের চেম্বারে হাজির হনুমান! চোখে সমস্যার কথা জানাল নিজেই - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday 7 May 2022

চিকিৎসা করাতে ডাক্তারের চেম্বারে হাজির হনুমান! চোখে সমস্যার কথা জানাল নিজেই


বাঁকুড়া: অসুস্থ শরীর, যন্ত্রণায় নাজেহাল অবস্থা। কিন্তু কে নিয়ে যাবে চিকিৎসকের কাছে! তার ভাষা যে কেউ বোঝে না। তাই চিকিৎসা করাতে হনুমান জি নিজেই সোজা চলে এলেন ডাক্তার বাবুর চেম্বারে। শুধু তাই নয়, ইশারা করে দেখিয়ে দিলেন চোখের সমস্যা। শরীরের আর কোথায় অসুবিধা সেটাও দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তখনই ডাক্তারবাবু পশু চিকিৎসকের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করে ঔষধ দেন। ঔষধ নিয়ে টানা প্রায় দুঘণ্টা বেডে শুয়ে থাকে হনুমানটি। অবাক করা ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার সিমলাপালের দুবরাজপুর গ্রামে গ্রামীন চিকিৎসক অনিমেষ পালের চেম্বারে।


বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটা নাগাদ ডাক্তার পালের চেম্বারে গিয়ে দেখা গেল মাঝবয়সি একটি হনুমান রোগীদের বসার আসনে শুয়ে আছে। তখন ডাক্তার বাবু অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসা করছেন। আর চিকিৎসা নিতে আসা অন্য মানুষরা হনুমানের গায়ে-মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। কেউ বা এনেছেন কলা, কেউ বা আপেল। কিন্তু কোন কিছুই খাচ্ছে না হনুমানটি। বারবার চোখ এবং মাথায় হাত দিয়ে কিছু একটা বোঝাতে চাইছে।


এ বিষয়ে গ্রামীণ চিকিৎসক অনিমেষ পাল জানান, হনুমানটিকে চেম্বারে দিকে আসতে দেখে ভয়ে আমি দরজা বন্ধ করে দিই। এরপর হনুমানটি চেম্বারে পাশেই একটি জলের ট্যাপ খুলে জল খায়। তারপর ট্যাপটি যথারীতি বন্ধও করে দেয়, যা দেখে উপস্থিত সকলেই হতবাক। এখান থেকে এসে হনুমানটি বারবার আমার দরজায় ধাক্কা মারতে থাকে। দরজা না খোলায় রাগে পাশাপাশি সাইকেল গুলোকে উল্টিয়ে দেয়। এরপর দরজা খুলতেই হনুমানটি রুগীদের ভিড় ঠেলে সরাসরি আমার টেবিলের উপর আমার মুখোমুখি বসে। ঔষধের খাপ নিয়ে আমাকে ইশারা করে দেখায় ঔষুধ দাও। শুধু তাই নয় চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখায় চোখে যন্ত্রণা হচ্ছে এমন কিছু।'


তিনি জানান, খবর পেয়ে অনেকেই বিভিন্ন রকমের ফল খেতে দেয় হনুমানটিকে। কিন্তু কোনও ফল না খেয়ে ফ্যানের নিচে হাওয়ায় চুপচাপ শুয়ে থাকে। একবার ইশারা করে ফ্যানের স্পিড বাড়াতে বলে। পরে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চিকিৎসক চোখে আই ড্রপ দেওয়া হয় হনুমানটিকে। এমনকি ব্যথানাশক ঔষধ হনুমানটি নিজেই খেয়ে নেয়।'


পরে খবর পেয়ে বনদপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান । দুপুর ২ টা নাগাদ দুবরাজপুরের বিট অফিসার ডাক্তার বাবুর চেম্বারে এলে হনুমানটি মোটরসাইকেলে চেপে বিট বাবুর সাথে ফরেস্ট অফিসে চলে যায়। কিন্তু যন্ত্রণা বাড়তে থাকায় ফের হনুমানটি বিকেল পাঁচটা নাগাদ ডাক্তার বাবুর চেম্বারে এসে একইভাবে শুয়ে থাকে। কিন্তু, ডাক্তার পাল কোন চিকিৎসা করেননি। 


তিনি বলেন, 'আমি পশু চিকিৎসক নই, কাজেই এটা আমার অধিকারের মধ্যে পড়ে না। রাতে হনুমানটি ডাক্তার বাবুর চেম্বারে পাশাপাশি এলাকা ছিল। শুক্রবার হনুমানটিকে দেখতে পাওয়া যায়নি বলে দুবরাজপুর গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানালেন। 


তবে এই বিষয়ে সারেঙ্গা রেঞ্জ অফিসার সুরজিৎ কুমার মজুমদার জানান, হয়তো এই প্রখর রোদে এই হনুমানটি অসুস্থ বোধ করেছিল বা জল খাবার জন্য দুবরাজপুর এলাকায় ঐ চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকে পড়েছিল। বর্তমানে হনুমাটিকে দুবরাজপুর বিট এলাকার থেকে সারেঙ্গা রেঞ্জে আনার পর চিকিৎসা করিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং পরে তাকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad