'কবিতা বিতান' বইটির জন্য ২৫ শে বৈশাখের দিন 'বাংলা একাডেমি পুরষ্কার' দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর মুখ্যমন্ত্রী পুরষ্কার পাওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কলাকুশলীদের একাংশ। শুধু তাই নয়, পদত্যাগ ও পুরষ্কার ফেরানোর মতো ঘটনাও ঘটছে। অন্নদাশঙ্কর রায় সম্মান ফেরাচ্ছেন লোকসংস্কৃতি গবেষক তথা বিশিষ্ট সাহিত্যিক রত্না রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই চিঠি লিখে বাংলা একাডেমির সভাপতিকে পুরষ্কার ফেরানোর কথা জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয় সাহিত্য একাডেমির উপদেষ্টামন্ডলী থেকে বুধবার পদত্যাগ করেছেন অনাদি বিশ্বাস।
সাহিত্যিক রচনা রশিদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, 'বাংলা সাহিত্যে তাঁর নিরলস সাধনা স্বীকৃতি হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি একটি নতুন পুরষ্কার ঘোষণা করে প্রারম্ভিক বছরে, রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অর্পণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রীকে এই পুরষ্কার প্রদানের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি শুধুমাত্র একটি ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে তাই নয়, এর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের সত্যিকারের নিরলস চর্চারত সকল মানুষকে অপমানিত করেছে। এই অবস্থায় ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই সালে এই সরকারের আমাকে দেওয়া অন্নদাশংকর স্মারক সম্মান ফিরিয়ে দিচ্ছি। কারণ এটি আমার কাছে কাঁটার মুকুটের মত মনে হচ্ছে।' উল্লেখ্য, তিনি দু'বারের বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপক।
অপরদিকে অনাদি বিশ্বাস জানান, 'রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনে কবিতা নিয়ে যখন একটি ছেলে খেলা হল কলকাতার বুকে, তখন আমার মনে হল, এখনকার সাহিত্যিকদের সঙ্গে এক সাথে বৈঠকে ওঠাবসা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়, তাই আমি উপদেষ্টামন্ডলী থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করি এটা আমার নৈতিক কর্তব্য যেহেতু আমি রবীন্দ্রনাথকে ভালবাসি তাকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করি।'
প্রসঙ্গত, এই বছর থেকে বাংলা একাডেমির ত্রিবার্ষিক পুরষ্কার দেওয়া চালু হয়েছে, আর প্রথম বছরেই কবিতা বিতানের জন্য পুরষ্কৃত করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সোমবার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মরণে কবি প্রণাম অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রাজ্যের তথ্য-সংস্কৃতি দফতর। সেখানেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই পুরষ্কারের জন্য নাম ঘোষণা করেন মমতার। যদিও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, তবে তিনি নিজে হাতে মঞ্চে উঠে পুরষ্কার গ্রহণ করেননি, তার হয়ে ব্রাত্য বসুই পুরষ্কার গ্রহণ করেন।
No comments:
Post a Comment