না ফেরার দেশে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পী তথা সন্তুর বাদক পন্ডিত শিবকুমার শর্মা। অমিতাভ মাট্টু ট্যুইট করে শিল্পীর প্রয়াণের তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি ট্যুইটে লেখেন, "হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম কিংবদন্তি পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা মারা গেছেন। গভীর ব্যক্তিগত অনুপ্রেরণার উৎস, আমি বঞ্চিত। ওম শান্তি!"
উল্লেখ্য, মৃত্যুকালে সন্তুর সম্রাট পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। শিল্পীর প্রয়াণে ট্যুইটে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকাহত তাঁর অনুরাগীরাও।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৬ মাস ধরে তিনি কিডনি সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছিলেন, ডায়ালসিস চলছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকালেই সব শেষ। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন তিনি।
সন্তুর মূলত কাশ্মীরের বাদ্যযন্ত্র। সেই উপত্যকার বাইরে খুব একটা পরিচিতি ছিল না, সারাদেশে এটাকে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিল পণ্ডিত শিব কুমার শর্মার। দেখতে দেখতে সরোদ-সেতারের মতোই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এটি এবং অনেকেই সন্তুর বাদ্যযন্ত্রটির প্রতি আকৃষ্ট হন।
সন্তুর বাদ্যযন্ত্র বাজানো পাশাপাশি পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়ার সঙ্গে মিলে বেশ কয়েকটি ছবির সংগীত পরিচালনা করেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা যেমন সিলসিলা, চাঁদনী, লমহে ইত্যাদি।
১৯৩৮ সালের ১৩ জানুয়ারি জম্মুর একটি সম্ভ্রান্ত সঙ্গীতজ্ঞ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা। তার বাবা উমা দত্ত শর্মা ছিলেন একজন বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী। বাবার কাছ থেকেই পাঁচ বছর বয়সে সংগীত ও তবলায় প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন পণ্ডিত শিব কুমার শর্মা।
উমা দত্ত শর্মা সন্তুর নিয়ে অনেক গবেষণা করেন এবং সিদ্ধান্ত নেন ছেলেকে তিনি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের সন্তুর বাদক হিসেবে গড়ে তুলবেন। যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। ১৩ বছর বয়স থেকেই ছেলেকে সন্তুরের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন তিনি। তৎকালীন বোম্বেতে জীবনে প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে সন্তুর বাজান পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা, সালটা ছিল ১৯৫৫। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি, দেশ পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়ে তার সুখ্যাতি।
আর আজ তাঁর এভাবে চলে যাওয়া, ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের জন্য সত্যিই একটি অপূরনীয় ক্ষতি।
No comments:
Post a Comment