জ্বালানির অপেক্ষায় পেট্রোল ও ডিজেলের অভাব শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এই বছর শ্রীলঙ্কায় পেট্রোলের দাম বেড়েছে ৯০% এবং ডিজেলের দাম ১৩৮% বেড়েছে। এ সময় চালকরা যেখানেই জ্বালানি পাওয়ার কথা জানতে পারেন, সেখানে যানবাহন টেনে নিয়ে যেতে হয়।
শ্রীলঙ্কায় মুদ্রাস্ফীতির স্তরটি সর্বকালের সবচেয়ে খারাপ স্তরের অন্তর্ভুক্ত। সরকারের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দেশে মূল্যস্ফীতির হার ১৭ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এক ডলারের মূল্য ৩৬০ শ্রীলঙ্কা রুপি। এমন পরিস্থিতিতে সিলিন্ডারের জন্য রাস্তায় দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ মৌলিক চাহিদার জন্য আন্দোলন করছে।
শ্রীলঙ্কার জনগণের কাছে আবেদন করা হচ্ছে: তেল, গ্যাস, ওষুধ, আটা ও চালের মতো মৌলিক জিনিসের জন্য শ্রীলঙ্কা অন্যান্য দেশের ওপর নির্ভরশীল। এমন পরিবেশ দেখে শ্রীলঙ্কানরা তাদের নেতৃত্ব নিয়ে খুব প্রতিবাদ করছে। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাকসে সহিংসতা বন্ধ করার জন্য বিক্ষোভকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন যে সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করা হচ্ছে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। কারফিউর পরও বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ আধিকারিকদের মারধর করে ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই সহিংস বিক্ষোভে কলম্বোর শীর্ষ আধিকারিকরাও আহত হয়েছেন। জনতার দৃষ্টি সরাতে কয়েকজন অফিসারকে বাতাসে গুলি করতে হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পরও জনগণ সহিংস বিক্ষোভ বন্ধ করেনি। তা ঠেকাতে বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ক্ষোভে জনতা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয়, যাতে ৮ জনের মৃত্যু হয়।
শ্রীলঙ্কায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পর সেখানকার পর্যটন স্থবির হয়ে পড়ে। এটাই শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের সবচেয়ে বড় কারণ। এখন শ্রীলঙ্কার অবস্থা এতটাই খারাপ যে বিদেশি ঋণ ফেরত তো দূরের কথা, নিজের দেশের মানুষকেও খাওয়াতে পারছে না।
No comments:
Post a Comment