হাওড়া: হাওড়ার শিল্পীদের হাতে তৈরি দুর্গা প্রতিমা এবার পাড়ি দিচ্ছে লন্ডনে। সাঁতরাগাছির স্টুডিওতে শিল্পী গৌরব পাল ও তার সহকর্মীরা তৈরি করছেন নজরকাড়া ফাইবারের প্রতিমা। মঙ্গলবার প্রতিমার চক্ষু আঁকা হয়। আগামী ২৫ জুন ওই দুর্গা প্রতিমা লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে।
সাঁতরাগাছির গভর্নমেন্ট কলোনি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করে চলেছেন শিল্পী গৌরব পাল। এটা তাদের পৈতৃক ব্যবসা। বাবা প্রভাত পাল প্রবীণ মৃৎশিল্পী। বাবার হাত ধরেই তার মৃৎশিল্পের কাজ শেখা। এছাড়াও গৌরব ২০০৯ সালে গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রী পান। এরপর এই মৃৎশিল্পী নিজেকে সম্পূর্ণ নিয়োজিত করেন। গত কয়েক বছর ধরে কলকাতার বেলগাছিয়া, যাদবপুর, রাজডাঙ্গা এবং খিদিরপুরের একাধিক বড় পুজো মণ্ডপের থিমের ঠাকুর তৈরি করেন। কলকাতার পাশাপাশি হাওড়ার বেশ কিছু নামী পুজো মণ্ডপের প্রতিমার তৈরীর দায়িত্ব পান। তবে ফি বছর তার স্টুডিওতে কুড়িটি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করলেও কোভিডের কারণে গত দু'বছর সেভাবে কাজ করতে পারেননি।
গৌরব জানান, এর আগে তার হাতে তৈরি প্রতিমা কানাডায় গিয়েছিল। তবে এবারে লন্ডনের একটি বাঙালি ক্লাব তাকে দুর্গা প্রতিমা তৈরির সরাসরি বরাত দেয়। গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে পাঁচজন সহকর্মীকে নিয়ে স্টুডিওতে কাজ শুরু করেন ওই শিল্পী। প্রথমে তিন রকম স্কেচ পাঠানো হয় লন্ডনে। সেখানে পুজোর উদ্যোক্তারা একটি স্কেচ মনোনয়নের পর তা গৌরবের কাছে পাঠান। এরপর স্কেচ অনুযায়ী ১০ ফুট লম্বা এবং ১২ ফুট চওড়া প্রতিমার খড়ের কাঠামো তৈরি হয়। তারপর মাটির প্রলেপ। ওই মাটির প্রলেপের ওপর প্লাস্টার অফ প্যারিস দিয়ে দুর্গা প্রতিমার ছাঁচ তৈরি করেন ওই শিল্পী। পরে ওই ছাচে ফাইবার ঢ়েলে প্রতিমা তৈরি করা হয়।
গৌরব পাল জানিয়েছেন, ফাইবারের তৈরি এই দুর্গা প্রতিমা আগামী ২৫ জুন লন্ডনের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেবে। ওখানে বাঙালি ক্লাবের উদ্যোগে এই প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মাঝে মাঝে ওখান থেকে ফোনে উদ্যোক্তারা দেখতে চান কাজ কতটা এগিয়েছে। গৌরব ও তার সহকর্মীরা মনে করছেন, তাদের তৈরি প্রতিমা নজর কাড়বে লন্ডনের প্রবাসী বাঙালিদের।
No comments:
Post a Comment