বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবীণ চলচ্চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদার গুরুতর অসুস্থ হয়ে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিডনির সমস্যা নিয়ে প্রথমে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন তিনি। অবস্থার উন্নতি না হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হঠাৎ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উডবার্ন ওয়ার্ড থেকে মেইন ব্লকের সিসিই-তে স্থানান্তরিত করা হয়। মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসকরা জানান, অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কিডনির অবস্থা খুবই খারাপ। হার্টের অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল, তার পাম্পিং ক্ষমতা কমে গিয়েছিল। ফলে শারীরিক অবস্থা বেশ জটিল হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে আনার পরপরই তার করোনা পরীক্ষা করা হয়। পরিচালক দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিল সমস্যায় জর্জরিত। 2000 সাল থেকে তার কিডনির সমস্যা রয়েছে। বহু বছর ধরে ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন পরিচালক।
তরুণবাবুর চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, ' বয়স ৯২ বছর। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে ভুগছেন তিনি। লিভারেও সমস্যা রয়েছে। হাইপোথাইরয়েডিজম আছে। অর্থাৎ আজকের টিএসএইচ পরীক্ষার পরের রিপোর্ট ভালো নয়। এর মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ১০০ এর উপরে। এটি একটি বিপজ্জনক স্তর। যা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের প্রবণতা বাড়ায় বা মাল্টি-অর্গান ড্যামেজ হতে পারে। তবে চিকিৎসকরা তার ওপর নজর রাখছেন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে কোনও পতন হয়নি। আরেকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, সিসিইউতে রাখার পর রয়্যালস টিউব ঢোকানো হয়েছে। এর মাধ্যমে খাওয়ানো হচ্ছে। শ্বাসকষ্টের কারণে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখতে প্রতি ঘণ্টায় ৪ থেকে ৬ লিটার অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তিনি ‘অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া’ রোগে আক্রান্ত। খাদ্যনালী থেকে পানীয় জলের কিছু অংশ যখন শ্বাসনালীতে পৌঁছে ফুসফুসে প্রবেশ করে তখন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, একে অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া বলে। সেই সংক্রমণ তরুণ মজুমদারের ফুসফুসে সমস্যা তৈরি করেছে। বুধবার আরও কিছু পরীক্ষা করা হবে।"
সোমবার হঠাৎ করেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের এই বিশেষ দল গঠন করা হয়। পরিচালক বর্তমানে অক্সিজেন সাপোর্টে রয়েছেন। রক্তচাপও উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। যদিও এই মুহূর্তে এটা স্বাভাবিক। বৈঠকের পর স্বাস্থ্যগত অবস্থা অনুযায়ী পরবর্তী চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, বাংলা চলচ্চিত্র জগতে প্রবীণ পরিচালকের অবদান অনেক। তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। পাঁচটি জাতীয় পুরস্কার রয়েছে তার। 'বালিকা বধূ', 'কুহেলি', 'শ্রীমান পৃথ্বীরাজ', 'ফুলেশ্বরী', 'দাদার কীর্তি', 'আপন আমার আপন', 'গণদেবতা', 'আলো'-এর মতো সুপারহিট ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment