একশো দিনের কাজে ভুয়ো মাস্টার রোল দেখানো সহ একাধিক প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ টাকা জালিয়াতির অভিযোগ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে, তদন্তের আশ্বাস বিডিওর।
একদিকে তৃণমূলের ২১ শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি যখন তুঙ্গে, তখনই শাসকদলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে সামিল হলেন গ্রামবাসীরা। বুধবার সকাল থেকেই পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ির সামনে, হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভে সরব হয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের সালালপুরের মানুষের একংশ। যদিও তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবী করেছেন অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ আলম।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ আলম একশো দিন প্রকল্পের পঞ্চায়েত কর্মীদের সঙ্গে যোগসাজশে পুকুর খনন, কবরস্থান সমতলীকরণ, জঙ্গল সাফাই, গার্ডওয়াল নির্মাণ ও ঢালাই রাস্তা নির্মাণের নামে ভুয়ো বিল করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
অভিযোগ, সিভিক ভলেন্টিয়ার, নিখোঁজ ও মৃত ব্যক্তির নামে ভুয়ো মাস্টার রোল বানিয়ে টাকা তোলা হয়েছে। বিবাহ বা কর্মসূত্রে অন্যত্রে বসবাসকারী ব্যক্তির নামেও ১০০ দিনের কাজে ভুয়ো মাস্টার রোল দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় প্রকৃত উপভোক্তাদের বাড়ি না দিয়ে টাকার বিনিময়ে অন্য কাওকে তা বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এই নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রামে সালিশি সভাও বসানো হয়। দুই উপভোক্তার টাকা ফেরত দিলেও এখনও পাঁচ উপভোক্তা বঞ্চিত রয়েছে বলে দাবী। কোনও রকম কাজ না করেও নিকট-আত্মীয় বয়স্ক পিতা-মাতা ও ঘনিষ্ঠদের একশো দিনের কাজে হাজিরা দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে আত্মসাৎ-এর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
গ্রামবাসীরা আরও অভিযোগ, দীর্ঘ পনের বছর আগে জেলা পরিষদ থেকে ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দে গ্রামবাসীদের ব্যবহারের উদ্দেশ্যে পঞ্চায়েত সদস্য আলমের বাড়ির সামনে সরকারি জমিতে পরিশ্রুত পানীয় জলের জন্য সাব মারসিবল বসানো হয়েছিল। এখন সেই জলের কল প্রাচীর দিয়ে ঘিরে নিজেই ব্যবহার করছেন পঞ্চায়েত সদস্য।
অন্যদিকে পঞ্চায়েত থেকে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দে জনবহুল এলাকা বাদ দিয়ে নিজের বাড়ির সামনে বসিয়েছে হাই মাস্ট লাইট এবং নিজের ব্যক্তিগত সুবিধার্থে রাস্তা থেকে বাড়ি পর্যন্ত পঞ্চায়েত থেকে করা হয়েছে কংক্রিটের ঢালাই রাস্তা।
এই বিস্তর দূর্নীতি প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ আলম জানান, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বিরোধীরা। তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শকুন্তলা সিংহ জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন। যদিও অভিযোগ পেয়ে দূর্নীতির তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু।
No comments:
Post a Comment