অনেক মুসলিম দেশেই নারীদের অবস্থা না তো খুব একটা ভালো, আর না তো তাদের প্রতি পুরুষের ভাবনা। সেখানে তাদের ওপর অনেক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তাদের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়। সম্প্রতি মধ্য এশিয়ার দেশ কিরগিজস্তানের পুরস্কার বিজয়ী মওলানা সাদায়বাকাস ডুলভ নারীদের নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা এই বাস্তবতারই কথা বলে। এই বক্তব্যের সমালোচনা হচ্ছে সারা বিশ্বে। মওলানা বলেছেন, মাংসের দাম বাড়ার জন্য মহিলাদের কম পোশাক পরা দায়ী।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মওলানা ডুলভ বয়স্কদের কাছে আবেদন করেছেন যাতে তারা মাংসের দাম কমাতে মহিলাদের বেশি পোশাক পরতে বলেন। রেডিও ফ্রি ইউরোপের রিপোর্ট অনুযায়ী, মওলানা বলেছেন যে, 'মাংসের দাম বাড়ছে কারণ মহিলারা তাদের শরীর বেশি দেখিয়ে নিজেকে সস্তা করছেন। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে তিনি বলেন, 'আপনার জায়গায় মাংস কখন দামি হয়ে যায় জানেন? এর টাকা বাড়ে যখন মহিলাদের মাংস সস্তা হয় এবং মহিলার মাংস তখন সস্তা হয়ে যায়, যখন তারা অঙ্গ প্রদর্শন করে, বুড়ো আঙুলের মতো উরু (থাই)ও দেখাতে শুরু করে।'
মওলানার এই বক্তব্যে নারীরা চরম ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এটি সোশ্যাল মিডিয়াতেও ক্রমশ ভাইরাল হচ্ছে এবং লোকেরা সেখানেও তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছে। ইমামের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করে সরকারের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী করছেন অনেক নারী। জানা গেছে, এই মাওলানা রাজধানীর স্বেরডলভ জেলার একটি মসজিদের ইমাম।
বিবৃতি নিয়ে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভ দেখে সরকারি ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে। আধিকারিকরা বলছেন যে, তারা ডুলভের বক্তব্য তদন্ত করেছেন এবং তার বক্তব্য কোনও নারীর সম্মান ও সুনাম লঙ্ঘন করেছে কিনা তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন। তদন্তে দেখা গেছে, মওলানা ডুলভের বক্তব্য কোনও ইসলামিক আইন লঙ্ঘন করেনি। তার বক্তব্যকে ভুলভাবে নেওয়া হয়েছে। ডুলভও বলেছেন যে, তার বক্তব্যকে কিছু লোক ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে।
উল্লেখ্য, কিরগিজস্তানে মাংসের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এ নিয়ে জনগণও সরকারকে প্রশ্নওষ করছে। গত মাসে কিরগিজস্তানে মাংসের দাম ছিল প্রায় ৬০০ টাকা প্রতি কেজি। দাম আরও বাড়বে বলে দাবী করা হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment