পদ্ম ফুল দেশের জাতীয় ফুল, এটি দেশের প্রতিটি নাগরিকের পাশাপাশি কৃষকদের জীবনে অনেক কিছু বোঝায়। পদ্ম ফুল চাষ করে কৃষকরা কম পরিশ্রমে ভালো আয় করতে পারে। আগে শুধু পুকুর ও ডোবায় পদ্ম চাষ করা হতো, কিন্তু কৃষিকাজে নতুন পরিবর্তন আসায় এখন ক্ষেতেও পদ্ম চাষ করা যায়। সরকার কৃষকদের পদ্মের সহ-ফসল করতে উৎসাহিত করছে, যার অধীনে জলে ও মাখানা ফসলের পাশাপাশি তারা পদ্ম চাষ করতে পারে। ভাল লাভের জন্য পদ্ম চাষের পাশাপাশি মাছ চাষ করা একটি লাভজনক চুক্তি হতে পারে।
আমাদের দেশে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর অর্থাৎ উৎসবের সময় পদ্ম ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়, তাই এর বীজ জুলাই মাসে রোপণ করা হয়। এই মৌসুমে বৃষ্টি ও নির্মল-ঠান্ডা বাতাসের কারণে এর গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। কৃষক চাইলে মাঠেও পদ্ম ফলাতে পারে। এ জন্য দুই মাস জমিতে জল রাখতে হয়, এরপর জুলাই মাসে পদ্মের শিকড় রোপণ করা হয়। পদ্মের শিকড় লাগানোর পর এর বীজ বপন করা হয়। জমিতে জল ও কাদা উভয়ের কারণে পদ্ম গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়, এরপর অক্টোবর-নভেম্বরে ফুল তোলা যায়।
পদ্ম চাষ করে আপনি কম খরচে চমৎকার আয় পেতে পারেন। বর্তমান সময়ে অনেক কৃষক গম ও ধানের মতো বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী ফসল ছেড়ে পদ্ম চাষ করছেন, কারণ এতে ক্ষতির সম্ভাবনা কম। রিপোর্টে বলা হয়, এক একর খামার বা পুকুরে ৬ হাজার গাছপালা জন্মানো যায়। যা ফসল তোলার পর বিক্রি হয় 12,000 টাকা কেজি দরে। বাজারে পদ্মের বীজ, পাতা, ফুল ও পদ্মগাট্টার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, পদ্ম চাষে প্রাথমিকভাবে 15,000-22,000 খরচ হয়, তারপরে 2-3 মাসে 55,000 টাকা পর্যন্ত আয় হয়।
পদ্ম ফুল ও এর প্রতিটি অংশ বাজারে ভালো দামে বিক্রি হয়। এছাড়াও এর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। এ কারণে অনেক কোম্পানি ঠিকাদারি দিয়ে পদ্ম চাষ করে। অনেক গ্রামে, হ্রদ ও পুকুরের চুক্তি দিয়ে কৃষকদের পদ্ম চাষে উৎসাহিত করা হয়। এর বাজার সম্পর্কে কথা বললে, উৎসব কাছাকাছি আসার সাথে সাথেই দিল্লী, বেরেলি, আলিগড়, আগ্রা, মথুরার মতো অনেক শহরে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কৃষক চাইলে অনলাইন মার্কেটে (Online Marketing of Lotus) পদ্ম বিক্রি করা যায় যুক্তিসঙ্গত মূল্যে।
No comments:
Post a Comment