এসএসসি কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হওয়া মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবার সকালে ভুবনেশ্বরে যেতে রাজি ছিলেন না। সোমবার সন্ধ্যায়, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বিএস রাজু, সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে হাজির হয়ে মামলার শুনানির সময় বিচারক জীবন কুমার সাধুকে এই তথ্য দেন।
তিনি আদালতকে জানিয়েছেন যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইডি আধিকারিকদেরও হুমকি দিয়েছেন। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বলেছেন যে তাঁর কাছে পুরো ঘটনার একটি ভিডিও রেকর্ডিং রয়েছে। শুধু তাই নয়, ইডি-র আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন যে, শনিবার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পার্থ ক্রমাগত ইডি আধিকারিকদের হুমকি দিয়ে চলেছেন। তিনি ইডি আধিকারিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং তাঁদের, তাঁর কক্ষ থেকেও বের করে দেন।
ইডি আধিকারিকদের অভিযোগ যে, তার কেবিনের ভিতরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় অন্যের ফোনের মাধ্যমে মানুষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। শুধু তাই নয়, পার্থ নিজের অবস্থানের অপব্যবহার করে নিজেকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করান, যাতে তিনি ইডি আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ থেকে বাঁচতে পারেন।
ইডি আধিকারিকরা আদালতকে জানিয়েছেন যে, সোমবার সকালে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পার্থকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি যেতে অস্বীকার করেন। পরে তাকে এসএসকেএম হাসপাতালের ডাক্তার, তার আইনজীবী এবং মামলার তদন্তকারী অফিসারদের সাথে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে AIIMS ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করে স্বাভাবিক বলেছেন।
ইডি-র কৌঁসুলি আদালতকে জানিয়েছেন যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের রক্তচাপ, অক্সিজেনের মাত্রা এবং অন্যান্য মাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। চিকিৎসকরা তাদের প্রাথমিক রিপোর্টে বলেছেন, তাঁর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই।
এমন পরিস্থিতিতে ইডির অভিযোগ, সত্য আড়াল করতে এবং তদন্তকারী সংস্থা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে মন্ত্রী অসুস্থতার ভান করছেন। দরিদ্র ও প্রকৃত দাবীদারদের চাকরি থেকে দূরে রেখে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মন্ত্রী। এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্ৰেফতার করে টাকা কোথায় গেল, তা খুঁজে বের করতে হবে। ইডির আইনজীবী বলেন, এটা একটা বড় কেলেঙ্কারি, এর সত্যতা সবার সামনে আসা উচিৎ।
উল্লেখ্য, শনিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অসুস্থতার কারণে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার এবং প্রয়োজনে ভর্তি করার ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশের বিরুদ্ধে ইডি হাইকোর্টে আবেদন করেছিল। ইডি-র আবেদনের শুনানির সময়, কলকাতা হাইকোর্ট মন্ত্রীকে AIIMS ভুবনেশ্বর থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে বলেছিল এবং ট্রায়াল কোর্টে শুনানির সময় সোমবার বিকেলে তার প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করতে বলেছিল।
No comments:
Post a Comment