প্রয়োজন নেই পড়াশোনার, আর না তো প্রয়োজন কোনও পরীক্ষার, শুধু নাম বলুন এবং পছন্দসই কোর্স এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী নিয়ে যান। ১০ হাজার দিলে মার্কশিট পাবেন, ২০ হাজারে ডিগ্রি। এমনই ব্যবসা পেতে বসেছিলেন ৬ জন। বর্তমানে এদের সকলেই গ্রেফতার করেছে দিল্লী পুলিশ।
দিল্লীর কিলোকারী গ্রামে, পুলিশ জাল মার্কশিট ও ডিগ্রী চক্রের পর্দা ফাঁস করেছে। জাল শিক্ষা কেন্দ্র চালানোর অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪ জন মেয়ে এবং ২ জন ছেলে। তাদের বয়স ২২ থেকে ২৭ বছরের মধ্যে।
সাইবার থানা, জাল শিক্ষা কেন্দ্র সম্পর্কে গোপন তথ্য পায়। এই কেন্দ্রটি কিলোকারী গ্রামের হ্যান্ডল্লি গ্রামের মাউন্টেন ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি নামে চলছে। পুলিশ দল এই জায়গাটিতে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করে। মঙ্গলবার দুপুরে প্রায় সাড়ে ৩টার দিকে দলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেই সময় ফোনে আলোচনায় ব্যস্ত ছিল চার মেয়ছ। পুলিশ সবাইকে ধরে ফেলে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, এরা প্রত্যয়িত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ / বিসিএ / এমসিএ অনেক কোর্সের ব্যাক ডেটেড মার্কশিট, ডিগ্রি এবং সার্টিফিকেট তৈরি করার কাজ করে। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এ ছাড়া জাল মার্কশিট তৈরিতে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, সিল ও প্রিন্টার, ডিগ্রি ও সার্টিফিকেট, ব্যাক ডেটেড ডিগ্রি, মার্কশিট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
সাইবার পুলিশ স্টেশন, সাউথ ইস্ট ডিস্ট্রিক্টের পুলিশ কর্মীরা এই ভুয়ো শিক্ষাকেন্দ্রের পর্দা ফাঁস করে এবং ৬ অভিযুক্ত- রেখা (২২ বছর), দীপিকা (২২ বছর), পুনম (২৬ বছর), অমিতা (২২ বছর), রেহান (২৫ বছর) এবং কাইফকে (২৭ বছর) গ্রেফতার করে।
তাদের কাছ থেকে রেকর্ড রেজিস্টারসহ মাউন্টেন ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজির নামে একটি পেমেন্ট স্লিপও উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক রেহান ও কাইফ। তাদের দুজনকেই তাদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। জাল মার্কশিট/ডিগ্রী কেনা প্রার্থী এবং ডিগ্রী বিক্রিকারী অভিযুক্তদের মধ্যে কথিত লেনদেনের ডেটা বের করার জন্য মামলার আরও তদন্ত চলছে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, এই ব্যক্তিরা একটি ওয়েবসাইট shine.com থেকে কাঙ্খিত প্রার্থীদের তথ্য পেতেন। তারপর তারা ফোন করে প্রলুব্ধ করে বিভিন্ন ইউজি-পিজি কোর্সের ডিগ্রী ফিরিয়ে আনার জন্য কোনও পরীক্ষায় না বসেই প্রয়োজন অনুযায়ী মার্কশিট/ডিগ্রী দেওয়ার জন্য জনপ্রতি ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা চার্জ করত। ইউপিআই এবং অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ প্রদান করা হচ্ছিল। টাকা পাওয়ার পর ওই প্রার্থীকে যেকোনও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া ডিগ্রি দিত এই লোকেরা। কিন্তু এসব শিক্ষার্থীর কোনও নথি ও তাদের প্রাপ্ত ডিগ্রি কখনই সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আপডেট হত না, কারণ ডিগ্রিগুলো জাল ছিল।
No comments:
Post a Comment