এই পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা আছে, যা বিভিন্ন সময়ে সামনে আসে এবং আমাদের অবাক করে দেয়। এমনই একটি উদাহরণ হল সেন্ট্রালিয়া শহর, যা ষাট বছর ধরে জ্বলছে। এখানকার বাসিন্দারাও শহর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। ১৯৬২ সালে শুরু হওয়া এই আগুন নেভাতে অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল এবং এখনও চলছে সেই চেষ্টা কিন্তু আগুন লাগার নামই নিচ্ছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় রয়েছে নির্জন এই শহর সেন্ট্রালিয়া। শহরের মাটির নীচে এই আগুন রয়েছে। এখানকার জমিতে বিদ্যমান ফাটল থেকে বিষাক্ত গ্যাস বের হচ্ছে। দাবী করা হচ্ছে, এই আগুন আগামী ১০০ বছর এভাবেই জ্বলতে থাকবে।
এই শহরটি আমেরিকার পূর্ব উপকূলে অবস্থিত পেনসিলভানিয়া রাজ্যে পড়ে। এটি একসময় খনির জন্য পরিচিত ছিল। এখানে প্রচুর পরিমাণে খনির কাজ করা হয়েছিল। ১৯৬২ সালের মে মাসে, একটি আবর্জনা ডাম্পে আগুন ধরে যায়, যা মাটির নীচে হাজার হাজার ফুট কয়লা খনিতে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডের ৬০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও আগুন নেভানো যায়নি।
আগুন নেভানোর সম্পূর্ণ চেষ্টা যে হয়নি, তা নয়। সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিলেও কোনওটাই সফল হয়নি। এখানে কার্বন মনোক্সাইডের মতো ক্ষতিকারক গ্যাসগুলো ছড়িয়ে মাটির ফাটল দিয়ে প্রবেশ করতে থাকে, ফলে এখানে বসবাস করা খুবই বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। এ কারণেই মানুষ এখান থেকে চলে গেছে। এখন এখানে মাত্র ৫ জন বসবাস করছেন।
আগুনের পর ২০ বছর ধরে মানুষ এখানে বসবাস করে। ১৯৮১ সালে, টড ডম্বোস্কি নামে এক ১৫ বছর বয়সী ছেলে তার বাড়ির পিছনে খেলছিল। হঠাৎ মাটিতে ফাটল ধরে সে নিচে পড়ে যেতে থাকে । তার পরিবারের সদস্যরা তাকে কোনোভাবে বাঁচাতে পারলেও এরপর থেকে লোকজন তা খালি করতে শুরু করে।
১৯৮৩ সালে, রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করে এবং এখান থেকে বেশিরভাগ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেয়। তবে, ৫ জন বাসিন্দা শহর খালি করতে অস্বীকার করেন। তারা এখনও সেখানেই বসবাস করেন। এ জন্য তারা আইনি লড়াইও করেছেন। কিন্তু চলতি বছরের মধ্যেই, শহরটি স্থানীয় পরিবহন থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। সামগ্রিকভাবে,এটি এখন ভূতের-শহরের মর্যাদা অর্জনের পথে রয়েছে।
No comments:
Post a Comment