বর্ষাকালে মশা অনেক সময় অনেক কষ্ট করে। মানুষ মশার কামড়কে হালকাভাবে নেয়। মশার কামড় অনেক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে। কারণ মশা অনেক ধরনের সংক্রমণের বাহক হতে পারে। এই রোগগুলি অনেক সময় বেশ বিপজ্জনক এবং মারাত্মক হতে পারে। মশার কামড়ের ফলে সৃষ্ট প্রধান রোগগুলি হল ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, হলুদ জ্বর এবং জিকা ভাইরাস ইত্যাদি। এসব রোগ থেকে বাঁচতে মশা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। আসুন জেনে নিই এই রোগগুলো এবং তাদের লক্ষণগুলো সম্পর্কে।
মশার কামড় দ্বারা সৃষ্ট রোগ:
ডেঙ্গু
এডিস ইজিপ্টাই মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগ হয়। উচ্চ জ্বর সাধারণত ডেঙ্গুর প্রধান উপসর্গ হিসেবে বিবেচিত হয়। ডেঙ্গু মশা থেকে বাঁচতে এই মৌসুমে পুরো হাতা পোশাক পরুন। ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ রাখুন এবং বাড়ির চারপাশে পানি জমতে দেবেন না। যদি সঠিক সময়ে ডেঙ্গুর চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে মানুষ মারাও যেতে পারে।
ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ
ডেঙ্গুর উপসর্গের মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, মাথাব্যথা, চোখে ব্যথা, মাথাব্যথা, পেশী ও জয়েন্টে ব্যথা এবং শরীরে ফুসকুড়ি। ডেঙ্গুর উপসর্গ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে, তাই জ্বর না কমলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
চিকুনগুনিয়া
চিচিকুনগুনিয়া সংক্রমিত এডিস ইজিপ্টাই এবং এডিস অ্যালবোপিকটাস মশার কামড়ে ছড়ায়। চিকুনগুনিয়া ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়ায় না। এই মশার কামড়ে শরীরে অনেক দুর্বলতা দেখা দেয়। যার কারণে অনেক সময় চিকুনগুনিয়া হওয়ার পর একজন ব্যক্তির সম্পূর্ণ সুস্থ হতে অনেক দিন সময় লাগতে পারে।
চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ
উচ্চ জ্বর, পেশী ব্যথা, দুর্বলতা এবং জয়েন্টে ব্যথা ইত্যাদি।
ম্যালেরিয়া
স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হয়। এই রোগে ব্যক্তির শরীরের লোহিত রক্তকণিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার কারণে ব্যক্তির সমস্যা হয়। ম্যালেরিয়া এড়াতে এবং মশার বংশবৃদ্ধি রোধ করতে মশারি ব্যবহার করুন।
ম্যালেরিয়ার লক্ষণ
জ্বর, ঠাণ্ডা, শরীর ব্যথা ও দুর্বলতা ইত্যাদি।
হলুদ জ্বর
ফ্ল্যাভিভাইরাস দ্বারা হলুদ জ্বর হয়। এই জ্বরকে হলুদ জ্বরও বলা হয়। এই জ্বরের লক্ষণ সাধারণত আক্রান্ত হওয়ার ৪ থেকে ৫ দিন পরে দেখা যায়। হলুদ জ্বরের জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়। বর্ষাকালে হলুদ জ্বর বেশি হয়। এই রোগ থেকে বাঁচতে মশা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
হলুদ জ্বরের লক্ষণ
জ্বর, দুর্বলতা, ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
জিকা ভাইরাস
জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত মশার কামড়ে এই রোগ হয়। এই রোগ দ্রুত ছড়ায়। জিকা ভাইরাস গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মা থেকে তার শিশুর কাছেও সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। রক্ত পরিবর্তনের সময় এবং শারীরিক সম্পর্কের সময়ও এই রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে।
জিকা ভাইরাসের লক্ষণ
উচ্চ জ্বর, মাথাব্যথা, ফুসকুড়ি এবং জয়েন্টে ব্যথা ইত্যাদি।
এই সব রোগ মশার কামড়ে হয়। বর্ষাকালে মনে রাখবেন ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ রাখুন, পুরো হাতা কাপড় পরুন, মশা বেশি থাকে এমন জায়গায় যাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং মশারি ব্যবহার করুন। আপনার যদি জ্বর হয়, শীঘ্রই একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করুন এবং একটি পরীক্ষা করুন। সমস্যা বাড়ার আগেই চিকিৎসা নিন।
No comments:
Post a Comment