অনির্দিষ্টকালের জন্য হাওড়া বাস ডিপো থেকে সরকারি বাস চালানো বন্ধ করলেন অস্থায়ী বাস কর্মীরা। পুজোর মুখেই ভোগান্তির আশঙ্কা।
দিন কয়েক পরেই বাঙালির বড় উৎসব দুর্গা পুজো। এই সময় অনেকেই ছুটি কাটাতে বাইরে কোথাও না কোথাও যেতে চান। দিল্লী থেকে দার্জিলিং অথবা মুম্বাই থেকে মানালি। কিন্তু সবার তো সে সাধ্য হয় না, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত বাঙালির। তাঁদের অনেকেই ছোটেন দীঘা বা মান্দারমনি।
আর এই পুজোর মুখেই বাঙালির দুঃশ্চিন্তা বাড়িয়ে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার দীঘা-হলদিয়া ডিপোর মতোই, অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেছেন হাওড়া গুমটি থেকে অস্থায়ী ড্রাইভার ও কন্ডাক্টররা। স্থায়ীকরণের দাবীতে বুধবার থেকে শুরু করা এই কর্মবিরতিতে স্তব্ধ হাওড়া থেকে কলকাতা এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় যাওয়ার সিংহভাগ সরকারি বাস।
সবচেয়ে বড় কথা, এই ধর্মঘটে সামনের সারিতে রয়েছেন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের আওতাধীন
অস্থায়ী কর্মীদের সংগঠন। ফলে ধর্মঘট হয়েছে একশো শতাংশ। বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গ রাজ্য পরিবহন নিগমের হাওড়ার ডিপোর চুক্তি ভিত্তিক কর্মীরা কর্ম বিরতি শুরু করলেন। তাদের একাধিক দাবী-দাওয়া রয়েছে। আর সেই দাবী না মানলে তারা এই কর্ম বিরতি আগামী দিনও চালাবেন। উল্লেখ্য, এই দাবীগুলোর মধ্যে রয়েছে, ২০১৩ থেকে ২০২২ পর্যন্ত অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ, সম কাজে সম বেতন-সম ছুটি, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ইত্যাদি।
এর জেরে এদিন হাওড়া থেকে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের ডিপো থেকে কোনও বাস বের করা হয়নি। যারা স্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করছেন দফতরে, তারা দুটো থেকে তিনটে বাস বের করেন এদিন। পাশাপাশি তাদের এই কর্ম বিরতিতে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ বেশ কয়েকটি দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের গুমটির চুক্তি ভিত্তিক কর্মচারীরাও সামিল হয়েছেন। রুটের সমস্ত সরকারি বাস পরিষেবা বন্ধ রয়েছে।
হাওড়া ডিপোর পরিবহন কর্মী শুভজিৎ দাস জানান, পুজোর মুখে এভাবে ধর্মঘটে নামতে তাঁরা বাধ্য হয়েছেন। সাধারণ মানুষের যে অসুবিধা হবে তার জন্য তাঁরা দুঃখিত। কিন্তু, তাঁদের বিগত দু'মাস ধরে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই তাঁরা এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, দীঘা ডিপোতে সোমবার থেকে ধর্মঘট শুরু হওয়ার পরে আজকে তাঁরা যোগ দিয়েছেন। এছাড়াও দীঘা, তমলুক, মেদিনীপুর, কাঁথি, ঝাড়গ্রাম, সিউড়ি সহ মোট ১০ টি ডিপো এতে দ্রুত যোগ দেবে। তাঁদের দাবী যতক্ষণ না মেটানো হচ্ছে, অনির্দিষ্টকালের জন্যই এই ধর্মঘট তাঁরা চালিয়ে যাবেন। পাশাপাশি হাওড়া ডিপোতে নিয়মিত কর্মীরাও তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বলেই জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহের সোমবার থেকে দীঘাতে ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে জেলার পর্যটন শিল্পে। পুজোর মুখে এভাবে পরিবহন ধর্মঘট চলতে থাকলে পর্যটন ব্যবসা মার খাবে বলেই আশঙ্কা দীঘার ব্যবসায়ীদের। এতে বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন বলেই আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
No comments:
Post a Comment