বাঁকুড়া: ভিন রাজ্যে উদ্ধার বাংলার দুই যুবক-যুবতীর পচা-গলা দেহ। মৃতদের নাম অর্পিতা পাল (২০) ও প্রসেনজিৎ ঘোষ ওরফে শানু (২২)। দু'জনের বাড়ি বিষ্ণুপুর থানা এলাকার মুচডাং ও রাধানগর গ্রামে। সুদূর চেন্নাইতে গিয়েই কী 'ত্রিকোণ প্রেমের বলি' যুবক-যুবতী? এই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের রাধানগর এলাকার মানুষের মধ্যে।
স্থানীয় ও মৃতদের পরিবার সূত্রে খবর, মুচডাং গ্রামের অর্পিতা পাল ২০২০ সালে স্থানীয় রাধানগর হাই স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়ার সময়ই বিষ্ণুপুরের একটি বেসরকারী হোটেল ম্যানেজমেন্ট কলেজে ভর্তি হয়। এক বছরের পাঠক্রম শেষে চেন্নাইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে যায়। সেখানেই পরিচয় হয় আসামের এক যুবকের সাথে। ঘটনাচক্রে তিনি অর্পিতাকে সব কাজে বিশেষ সহায়তা করতেন।
এরপর গত মার্চ মাসে বিশেষ প্রশিক্ষণ শেষে ওখানকারই অন্য একটি হোটেলে কাজে যোগ দেয় অর্পিতা। এদিকে রাধানগরের প্রসেনজিৎ ঘোষ ওরফে শানুর সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল অর্পিতা পাল নামে ওই যুবতীর। দু'জনের সম্পর্কের মাঝে আসামের যুবক এসে পড়ায় সমস্যার তৈরী হয়।
গত শুক্রবার 'কাজে যাচ্ছি' বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় শানু। এরপর থেকে তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি বলেও তার পরিবার সূত্রে দাবী করা হয়েছে। পরে গত রবিবার অর্পিতা যে হোটেলে কাজ করতো সেখান থেকে তার বাড়িতে ফোন করে জানানো হয় সে কাজে আসেনি, ফোনেও যোগাযোগ করা যায়নি। ঠিক তারপর দিন সোমবার বাড়িতে ফোন আসে 'অর্পিতার পচা-গলা মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে'। বুধবার প্রসেনজিৎ ঘোষ ওরফে শানুর বাড়িতে ফোন আসে চেন্নাইতে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এমনকি মৃত্যুর আগে অর্পিতা-প্রসেনজিৎ চেন্নাইয়ের একটি হোটেলে ছিল বলেও খবর।
পুলিশ সূত্রে খবর, অর্পিতাকে খুন করে পরে আত্মঘাতী হয়েছেন প্রসেনজিৎ ঘোষ ওরফে শানু। তবে, পুলিশের দাবী মানতে নারাজ মৃতদের পরিবার। তাদের দাবী, তৃতীয় ব্যক্তি আসামের ওই যুবকই এদের দু'জনকে খুন করে গা ঢাকা দিয়েছে। এদিকে ঘটনার পর ওই অভিযুক্ত যুবকেরও ফোন বন্ধ বলে অর্পিতার পরিবারের তরফে দাবী করা হচ্ছে।
সন্তানদের মৃত্যুর খবর মিলতেই দুই পরিবারের সদস্যরা চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবী তুলেছেন সকলেই।
No comments:
Post a Comment