কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠ তিথিতে পালিত হয় ছট পূজা। এই উৎসবে মহিলারা ৩৬ ঘন্টা নির্জলা উপবাস পালন করেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে ছঠি মাইয়া এবং নিয়ম অনুসারে ভগবান সূর্য দেবতার আরাধনা করলে তাঁরা তাঁর ভক্তদের ওপর সর্বদা আশীর্বাদ বর্ষণ করেন। এটাও মান্যতা রয়েছে, এই পুজো করলে নিঃসন্তানরা সন্তান লাভ করেন ও সন্তানের জীবনে আসা সমস্ত বাধার অবসান হয়।
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, ছাঠি মাইয়া হলেন সূর্য দেবতার বোন। শাস্ত্র অনুসারে, পৃথিবীতে জীবন বজায় রাখতে এবং ভগবান সূর্যদেবকে ধন্যবাদ জানাতে এই পূজা করা হয়। পুরাণে বর্ণিত গল্পকথা অনুসারে, ছট মাতাকে ব্রহ্মাজির মানস কন্যা বলা হয়। রামায়ণ ও মহাভারত যুগেও এই উৎসবের উল্লেখ আছে।
এই উৎসবটি যদিও সারা দেশ জুড়ে পালিত হয়, কিন্তু উত্তর প্রদেশ, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডে এই উৎসবের ভিন্ন চমক দেখা যায়। ছট পূজার প্রস্তুতি এক মাস আগে থেকেই শুরু হয়। চার দিনের এই উৎসব শুরু হয় নাহায়ে-খায়ের মধ্য দিয়ে। আসুন জেনে নেওয়া যাক, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ডে ছট পূজা কখন হয় এবং এর শুভ সময় ও গুরুত্ব থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ তথ্য।
পঞ্চাং অনুযায়ী, কার্তিক মাসের ষষ্ঠ দিনে ছট পূজার পবিত্র উৎসব পালিত হয়। 'নাহায়ে খায়ে' দিয়ে শুরু হওয়া এই উৎসব ২৮ অক্টোবর শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে। খরনা, ছটের দ্বিতীয় দিন, শনিবার, ২৯ অক্টোবর। ছট পূজায় খরনার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই দিনে ব্রতী মহিলারা রাতে ক্ষির খান। অন্যদিকে ছটের তৃতীয় দিন সন্ধ্যা অর্ঘ্য ৩০ অক্টোবর রবিবার এবং ছটের চতুর্থ ও শেষ দিন ৩১ অক্টোবর সোমবার- এই দিনে উদীয়মান সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদনের বিধান রয়েছে।
ছট পূজার মহত্ত্ব
সনাতন ধর্মে ছট পূজার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এটি এমন একটি উত্সব, যেখানে কেবল উদীয়মান সূর্যেরই পূজা করা হয় না, অস্তগামী সূর্যকেও পূজা করা হয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে, এই দিনে ছট মাইয়াকে নিয়ম করে পূজা করলে এবং ভগবান সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদন করলে সন্তান সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়। ছট পুজোয় পরিচ্ছন্নতার বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়। কার্তিক মাস শুরু হওয়ার সাথে সাথে উপবাসকারী মহিলারা সাত্ত্বিক খাদ্য খাওয়া শুরু করেন। আজ এই উৎসব শুধু উত্তরপ্রদেশ ও বিহারেই সীমাবদ্ধ নয়, দেশ ও বিশ্বকে এই উৎসবে মেতে উঠতে দেখা যাচ্ছে।
No comments:
Post a Comment