ব্রজের প্রতিটি উত্সব অত্যন্ত আড়ম্বর ও আনন্দের সাথে পালিত হয়। তবে গোবর্ধন পুজোর আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। ব্রজবাসীরা সারা বছর গোবর্ধন পূজার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। কারণ এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হাতের কনিষ্ঠা আঙুলে গিরিরাজ পর্বত তুলে গোকুলবাসীর প্রাণ রক্ষা করেছিলেন। তাই প্রতি বছর ব্রজসহ সারা দেশে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের গিররাজ মহারাজের রূপ দিয়ে পূজা করে পুণ্য অর্জন করে। মথুরা, নন্দগাঁও, বরসানা, গোবর্ধন, বৃন্দাবনের মতো জায়গায়, প্রতিটি বাড়িতে খুব আড়ম্বর সহকারে গোবর্ধন পূজা করা হয়। গোবর্ধন পূজার সবচেয়ে বিশেষ বিষয় হল, গোবর্ধন পূজার দিন ভগবান শ্রী কৃষ্ণের রূপটি মাটি বা পাথর ইত্যাদি দিয়ে নয় বরং গোবর দিয়ে তৈরি করা হয়, যেখানে ভগবান শ্রী কৃষ্ণকে গিরিরাজ পর্বত হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। .
শ্রীকৃষ্ণের নগরী মথুরার গোবর্ধনে গোবর্ধন পূজার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। কারণ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গোবর্ধনেই গিরিরাজ পর্বত তুলে গোকুলবাসীর প্রাণ রক্ষা করেছিলেন। যার কারণে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের নামও রাখা হয়েছিল গিররাজ মহারাজ এবং বিশেষ করে গোবর্ধনে, এই পূজা অত্যন্ত আনন্দ এবং আড়ম্বর সহকারে পালিত হয়। লক্ষ লক্ষ ভক্ত এই দিন গোবর্ধন দর্শন করেন। পূজার পর তারা তাদের আরাধ্যকে প্রদক্ষিণ করে।
মান্যতা অনুসারে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ইন্দ্রদেবের অহংকার ভঙ্গ করেছিলেন বলেই গোবর্ধন পূজার উৎসব হয়। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, দ্বাপর যুগে ভগবান ইন্দ্রদেব তাঁর পূজা না করায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। এরপর টানা ৭ দিন বৃষ্টি হয়। এই বৃষ্টির কারণে সমস্ত গোকুলবাসীর জীবন বিপদে পড়েছিল, প্রাণ বাঁচাতে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ হাতের কনিষ্ঠা আঙুলে গিরজ পর্বত তুলে সমস্ত গোকুলবাসীর সামনে পাহাড় থেকে নেমে আসেন। এরপর ইন্দ্রদেব তার ভুল বুঝতে পারলেন। তিনি জানতে পারলেন যে, ভগবান শ্রী কৃষ্ণ কোনও সাধারণ পুরুষ নন, স্বয়ং নারায়ণের রূপ। এরপর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সামনে পৌঁছে তিনি তাঁর অপরাধের জন্য ক্ষমা চাইলেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণও তাকে ক্ষমা করে দেন। এরপর থেকে প্রতি বছরই মানুষ ধুমধাম করে গোবর্ধন পূজা করতে থাকে। এবার ২৬ অক্টোবর ব্রজে অনুষ্ঠিত হচ্ছে গোবর্ধন পূজা।
No comments:
Post a Comment