'পশ্চিমবঙ্গ এখন গুন্ডাদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে।' মুর্শিদাবাদের নওদায়, নদিয়া জেলার তৃণমূল কংগ্রেস নেতা খুনের ঘটনায় মন্তব্য বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তিনি আরও বলেন, 'প্রতিদিন খুন হচ্ছে, প্রতিদিন বোমা ফাটছে, প্রতিদিনই গুলি হচ্ছে।' উল্লেখ্য, আগামী বছর রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার কথা এবং তার আগে সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে। বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সেই নিয়েই মুখ খুললেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।
তিনি আরও বলেন, “এখানে সমস্ত গুন্ডা টিএমসি পার্টির নেতা এবং অন্যান্য রাজ্যের সমস্ত গুন্ডাও পশ্চিমবঙ্গে চলে আসছে, কারণ এখানকার পুলিশ কারও গাঁয়ে হাত দেয় না। আমার মনে হয় সরকারের কোনও ক্ষমতা নেই। তাদের নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।”
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদ জেলার নওদা থেকে করিমপুর ফেরার পথে শিবনগর টিয়াকাটা এলাকায় দুষ্কৃতীদের আক্রমণে মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতার মতিরুল ইসলাম বিশ্বাস। তিনি নদিয়া জেলার নারায়ণপুর দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী তথা নদিয়ার করিমপুর ২ নম্বর ব্লকের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি। তাঁকে লক্ষ্য করে দুষ্কৃতকারীরা গুলি-বোমা ছোঁড়ে বলে অভিযোগ।
মতিরুলের ছেলে নওদায় একটি বেসরকারি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। হোস্টেলে থেকে পড়াশুনা করছে। মাঝে মাঝে তার সাথে দেখা করতে যেতেন তিনি, বৃহস্পতিবারও গিয়েছিলেন, সেখান থেকে বাইকে করে ফিরছিলেন তিনি। দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে প্রথমে বোমা নিক্ষেপ করে এবং এরপর তাকে গুলি করা হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। চিৎকার-বোমাগুলির আওয়াজে তড়িঘড়ি ছুটে আসেন স্থানীয়রাও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তৃণমূল নেতাকে নিয়ে আসা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠেছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, রাজ্যে বাড়ছে বোমাবাজি ও গুলিবর্ষণের ঘটনা। নদিয়ায় এক অভিযুক্তর বাড়ি থেকে ৮৩ রাউন্ড গুলি ও দুটি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার বিরোধীরা। দিলীপ ঘোষ বলেন, 'পঞ্চায়েত নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, গুলি আর বন্দুকের শব্দ বাড়তে শুরু করেছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও হিংসার ঘটনা ঘটলেও রাজ্য সরকার তা বন্ধ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।' তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, গত বছরের তুলনায় এ বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেশি হিংসার ঘটনা ঘটবে।
No comments:
Post a Comment