ডাইনি অপবাদ দিয়ে মহিলাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল গ্ৰামবাসীদের বিরুদ্ধে। এর আগে গ্রামের সবাই মিলে তার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুরো জিনিসপত্র নষ্ট করে দেয়। অত্যন্ত বর্বরোচিত এই ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের গয়া জেলার ডুমারিয়া ব্লকের মগড়া থানা এলাকার পাচমাহ গ্রামে।
অভিযোগ ওই মহিলাকে প্রথমে বেধড়ক মারধর করা হয়। প্রায় আধমরা হয়ে যান তিনি। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এসে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলেও বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে থাকে। তখনকার মত প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে গেলেও পরে অনেক থানার পুলিশ একসঙ্গে গ্রামে গিয়ে পৌঁছায়। কিন্তু পুলিশ পালিয়ে যাওয়ার ঐ সময়ের মধ্যেই মহিলাকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। মৃত মহিলার নাম ৪০ বছর বয়সী হেমন্তী দেবী, স্বামী অর্জুন দাস।
এ ঘটনায় নিহতের স্বামী জানান, ওই গ্রামের চন্দ্রদেব ভূঁইয়ার ছেলে মাসখানেক আগে মারা গেছে, সেই ঘটনায় তার স্ত্রীকে ডাইনি বলে অভিযোগ করেছে লোকজন। মাঝখানে পঞ্চায়েত বসিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু কিছুই হয়নি। এর পরে, শনিবার আবার ঝাড়খণ্ডের আশেপাশের এলাকা থেকে ওঝাকে ডেকেছিল উভয় পক্ষের লোকজন।
ঝাড়খণ্ডের নোডিহা এলাকার ওঝা মুন্না ভগতকে পঞ্চায়েতের জন্য চন্দ্রদেব ভূঁইয়ার তরফে ডাকা হয়েছিল। মুন্না ভগতের নির্দেশে মহিলাকে ডাইনি অভিযুক্ত করে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে দেওয়া হয়। এর পরই মহিলার পরিবারের সদস্যের ওপর হামলে পড়েন সবাই। পরিবারের লোকজন কোনও মতে বাড়িতে লুকিয়ে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করলেও উত্তেজিত জনতা ছাদ দিয়ে বাড়িতে ঢুকে ওই মারধর শুরু করে।
মহিলাটি অজ্ঞান হয়ে পড়লে লোকজন তাকে ঘরে থাকা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয় এবং পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ওই মহিলার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ এসে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গয়া মগধ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনাস্থলে একাধিক থানার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইমামগঞ্জের ডিএসপি মনোজ রাম জানান, মগড়া থানা এলাকার পাচমাহ গ্রামে এক মহিলাকে ডাইনি বলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার খবর পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। গ্রামের কিছু লোক মহিলাকে গণপিটুনিও দেয়। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
No comments:
Post a Comment