'দেশে সিএএ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং পশ্চিমবঙ্গও এই তালিকা থেকে বাদ যাবে না', মঙ্গলবার এমনই দাবী করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শুভেন্দু বলেন, "পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে কিছু সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিএএ ইতিমধ্যে গুজরাটের দুটি জেলায় কার্যকর করা হয়েছে।"
নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, “সিএএ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া থেকে বাংলাকেও বাদ দেওয়া হবে না। মতুয়া সম্প্রদায়ের সদস্যরা এবং নমশূদ্রদের মতো অন্যান্য অনগ্রসর জাতিরা শীঘ্রই কিছু সুবিধা পাবেন। আমাদের রাজ্যেও সিএএ কার্যকর করা হবে।”
কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, "আমি শুধু বলতে পারি যে, সিএএ বাস্তবায়িত হলে, এটি মতুয়া সম্প্রদায় সহ পিছিয়ে পড়া বর্ণের সদস্যদের জন্য অনেক সাহায্য করবে।"
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল কখনই রাজ্যে সিএএ কার্যকর হতে দেবে না। তাঁর দাবী, বিজেপি দেশে সিএএ বাস্তবায়ন করতে পারবে না। তাঁর অভিযোগ, 'শুভেন্দু অধিকারী ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সমাজের মেরুকরণের প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে লম্বা লম্বা দাবী করছেন৷
কংগ্রেস এবং সিপিআই(এম)-ও এই বিষয়ে তৃণমূলের সুরে সুর মিলিয়েছে। সিপিআই(এম)-কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, “আমরা দেশে সিএএ কার্যকর হতে দেব না। বিজেপি কারও সম্মতি ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না। দেশের কোনও ধর্মনিরপেক্ষ দল এটা হতে দেবে না।”
প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা বেরহামপুরের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরীও বলেন, "সিএএ বাস্তবায়নের বিষয়ে বিজেপি ফাঁকা আওয়াজ করছে। কংগ্রেস ঐক্য এবং সম্প্রীতির পক্ষে দাঁড়িয়ে আছে, ধর্মের ভিত্তিতে সমাজকে বিভক্ত করার জন্য নয়।"
উল্লেখ্য, গুজরাট বিধানসভা নির্বাচন ২০২২- এর আগে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নাগরিকত্বের বিষয়ে একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমএইচএ (MHA) পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বিষয়ে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের (MHA) বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫ -র অধীনে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আগত গুজরাটের আনন্দ ও মেহসানা জেলায় বসবাসকারী হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এরপর থেকেই নাগরিকত্ব ও সিএএ ইস্যুতে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা।
No comments:
Post a Comment