জনগণমন- আমাদের জাতীয় সঙ্গীত, কিন্তু আপনি কী জানেন প্রথমবার এটি সার্বজনীন মঞ্চে কবে গাওয়া হয়? যদি উত্তর হয় অজানা, তাহলে একনজর দেওয়া যাক এই প্রতিবেদনে।
আজ থেকে ঠিক ১১১ বছর আগে অর্থাৎ ১৯১১ সালের ২৭ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো একটি সার্বজনীন মঞ্চে (পাবলিক প্ল্যাটফর্ম) গাওয়া হয় 'জনগণমন'। এটি কলকাতায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে অনুরণিত (গীত) হয়েছিল। যদিও তখন পর্যন্ত এটিকে জাতীয় সঙ্গীত ঘোষণা করা হয়নি। এটি নোবেল বিজয়ী এবং জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অগ্ৰজা স্বর্ণকুমারী দেবীর কন্যা (দিদির মেয়ে) সরলা, স্কুলের শিশুদের সাথে বাংলায় জাতীয় সঙ্গীত গান। সামনে বসেছিলেন তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি বিষাণ নারায়ণ দার, অম্বিকা চরণ মজুমদার, ভূপেন্দ্র নাথ বসুর মতো নেতারা।
জনগণমন- 'ভারত ভাগ্য বিধাতা'-এর প্রথম স্তবক। এটি লিখেছেন কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯১৯ সালে অন্ধ্র প্রদেশের বেসান্ত থিওসফিক্যাল কলেজে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে প্রথমবার এটি গেয়েছিলেন। কলেজ প্রশাসন এটিকে সকালের প্রার্থনায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল।
পরে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর অনুরোধে আবিদ আলী এটিকে হিন্দি ও উর্দুতে রূপান্তরিত করেন। তারপরে এটি ইংরেজিতেও রচিত হয়, এটি ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর জাতীয় সঙ্গীত। ২৪ জানুয়ারী ১৯৫০ সালে, স্বাধীন ভারতের গণপরিষদ এটিকে তার জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে ঘোষণা করে।
স্বাধীনতার রাতে যখন প্রথমবার গণপরিষদ সভা বসে, তখন তা 'জন গণ মন' দিয়ে শেষ হয়। ১৯৪৭ সালেই, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ (UNGA) নিউইয়র্কে বৈঠক করেছিল এবং যখন ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে দেশের জাতীয় সঙ্গীত গাইতে বলা হয়েছিল, তখন UNGA-কে 'জন গণ মন' রেকর্ডিং দেওয়া হয়েছিল।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু একটি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন যে, সারা বিশ্বের প্রতিনিধিদের সামনে, 'জন গণ মন' অর্কেস্ট্রায় ধ্বনিত হয়েছিল এবং সবাই এর সুরের প্রশংসা করেছিল। যদিও তখন পর্যন্ত এটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি।
২৪ জানুয়ারী, ১৯৫০ যখন ভারতের সংবিধানে হস্তাক্ষর করতে সভা বসেছিল। সেইসময় দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ আনুষ্ঠানিকভাবে 'জনগণমন'কে জাতীয় সংগীত বা রাষ্ট্রগান (National Anthem) এবং 'বন্দে মাতরম'কে জাতীয় স্ত্রোত বা রাষ্ট্রগীত (National Song) হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।
No comments:
Post a Comment