গরু পাচার মামলায় তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল এবং তার দেহরক্ষী সেহগাল হুসেনকে আবারও ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। এছাড়াও সিবিআই আধিকারিকরা সংশোধনাগারে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করতে পারেন। বৃহস্পতিবার শুনানির সময় আসানসোলের একটি বিশেষ আদালত সিবিআইকে এই অনুমতি দেয়। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী নির্দেশ দিয়েছেন যে, সিবিআই আধিকারিকরা তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতিকে সংশোধনাগারে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই অনুমতি দিয়েছে। একই সঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন, এই মামলায় চার্জশিট দেওয়ার পর আরও ৪৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সিবিআইয়ের কৌঁসুলি আদালতকে জানিয়েছেন, সাক্ষী হিসেবে তাঁর নামও রয়েছে। এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে ১৯ জানুয়ারি।
গরু পাচার মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের দায়ের করা একটি মামলায় বৃহস্পতিবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে অনুব্রত মণ্ডলকে পেশ করা হয়। সকাল ১১টা নাগাদ আসানসোল সংশোধনাগার থেকে আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। অনুব্রত মণ্ডলকে গত বছরের ১১ আগস্ট গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।
সিবিআইয়ের পাশাপাশি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গরু পাচার মামলার তদন্ত করছে। তদন্তের স্বার্থে অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লীতে নিয়ে যেতে চায় ইডি। সেই অনুমতিও তারা পেয়েছে, কিন্তু এরপর নানা আইনি জটিলতায় আটকে যায় অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লী সফর।
ইডি অনুব্রতকে তার হেফাজতে নিয়েছিল বটে, কিন্তু তৃণমূল নেতাকে খুনের চেষ্টার মামলায় রাজ্যের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। জামিন পাওয়ার পর তাকে রামপুরহাট থেকে আসানসোল সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে অনুব্রতকে দিল্লী যেতে না দিতেই এই আইনি জটিলতা তৈরি করা হয়েছে বলে দাবী ইডির। ইডি এও দাবী করেছে যে, তারা সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে।
উল্লেখ্য, বুধবার কলকাতা হাইকোর্টেও অনুব্রতর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। হাইকোর্টে অনুব্রতর জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা পুনরায় কার্যকারিতার নীতি উল্লেখ করে অনুব্রতের জামিনের বিরোধিতা করে।
জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই বলে, বগটুই হত্যাকাণ্ডে অনুব্রতর জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরের পর গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার একটি ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার বলেছেন, "তদন্তের পর্যায়ে দেখে, তাকে এখন জামিন দেওয়া হচ্ছে না।"
No comments:
Post a Comment