অ্যাম্বুলেন্সের জন্য টাকা নেই, অগত্যা মায়ের মৃতদেহ কাপড়ে মুড়ে কাঁধে নিয়ে ৫০ কিমি দূর বাড়ির দিকে যাত্রা করলেন ছেলে। সঙ্গ দিলেন বাবাও। বৃহস্পতিবার চরম অমানবিকতার এই ছবি দেখা গেল জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে। অভিযোগ, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য তিন হাজার টাকা দাবী করে। দিনমজুরের রোজগারে মায়ের চিকিৎসা ও খাবার খরচ চলত কোনও রকমে। যে কারণে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য টাকা ছিল না, তাই অসহায় ছেলে তার মায়ের মৃতদেহ কাপড়ে বেঁধে কাঁধে নিয়ে ৫০ কিলোমিটার দূরে রওনা দেন। এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই প্রশাসনিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। যদিও পরবর্তীতে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এগিয়ে আসে তাঁদের সাহায্যের জন্য।
জানা গিয়েছে, মৃতদেহটি জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তি ব্লকের বাসিন্দা লক্ষ্মীরানী দেওয়ানের (৭২)। বুধবার তাকে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি মারা যান। পরিবারের দাবী, মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স তিন হাজার টাকা দাবী করে, যা দেওয়ার মতো টাকা তাঁদের কাছে ছিল না। তাই ছেলে ও বাবা মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন অনেকেই। অবশেষে খবর পৌঁছায় স্বেচ্ছাসেবী এক সংস্থার কাছে। এগিয়ে আসেন সেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি। মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং শেষকৃত্যেও সাহায্য করা হচ্ছে।
জলপাইগুড়ি থেকে ক্রান্তির দূরত্ব প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিনামূল্যে পরিষেবার ব্যবস্থা থাকলেও ব্যবস্থাপনা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। হাসপাতালের অভ্যন্তরে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স এবং অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা প্রদানকারীর দাম বৃদ্ধি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
No comments:
Post a Comment