পৃথিবীতে সব কিছুরই একটা দাম আছে। কোন জিনিস তো কম, কোনোটা বেশি। মানুষ তার দাম থেকে জিনিসের মূল্য খুঁজে পায়। কিন্তু এমন অনেক জিনিস আছে যেগুলো দেখতে ছোট মনে হলেও দাম এত বেশি যে সেগুলোর কথা শুনলে যে কেউ স্তম্ভিত হয়ে যায়। এখন আপনি শুধুমাত্র একটি ডাকটিকিট নিন। লাল রঙের এই টিকিটটি দেখতে একটি সাধারণ ডাকটিকিট এর মতো হলেও এর মূল্য জানলে আপনি হতবাক হয়ে যাবেন। অডিটি সেন্ট্রাল নিউজ ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, 'দ্য ব্রিটিশ গায়ানা ওয়ান সেন্ট ব্ল্যাক অন ম্যাজেন্টা' নামের স্ট্যাম্পটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্ট্যাম্প । তবে শুধু সবচেয়ে দামি স্ট্যাম্পই নয়, এর ওজন অনুযায়ী এটি বিশ্বের সবচেয়ে দামি জিনিসও বটে।
এই টিকিটের ওজন ৪০ মিলিগ্রাম এবং দাম ৭০ কোটি টাকার বেশি! অন্যদিকে, একটি ০.২ ক্যারেটের হীরা, যার ওজন মাত্র ৪০ মিলিগ্রাম, দাম ৫৮ হাজার টাকা। একই সময়ে ৪০ মিলিগ্রাম এলএসডির দাম প্রায় ৪ লাখ টাকা।
এই পরিসংখ্যান থেকে, আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কেন এই স্ট্যাম্পটি তার ওজন অনুসারে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল জিনিস! এখন প্রশ্ন জাগে এই স্ট্যাম্পের এত দাম কেন? এটির দাম এত বেশি কারণ এটি তার ধরণের একমাত্র স্ট্যাম্প, যার কোনো কপি নেই, এটিই একমাত্র। অন্যদিকে, সারা বিশ্বে স্ট্যাম্প সংগ্রাহকদের দ্বারা সংগ্রহ করা স্ট্যাম্পের অনেক কপি পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮৫৬ সালে ব্রিটিশ গায়ানার স্থানীয় সংবাদ অফিস বেশ কিছু কাগজের টুকরো ছাপিয়েছিল যার ওপর মাস্তুল দিয়ে একটি জাহাজের ছবি ছিল। এতে ব্রিটিশ উপনিবেশের নীতিবাক্যও লেখা ছিল- 'আমরা দান করি এবং বিনিময়ে পাওয়ার আশা করি'। পোস্টমাস্টার কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করা কিছু ডাকটিকিটের বিনিময়ে এই ডাকটিকিটগুলি ছাপা হয়েছিল। এই নতুন মুদ্রিত স্ট্যাম্পগুলি শুধুমাত্র কাজ চালানোর জন্য তৈরি করা হয়েছিল। মূল স্ট্যাম্পের একটি নতুন ব্যাচ মুদ্রিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই স্ট্যাম্পগুলি প্রচলন থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
প্রায় ১৭ বছর পর, ১৮৭৩ সালে, একটি ১২-বছরের ছেলে তার কাকার কাছ থেকে একটি চিঠিতে একই স্ট্যাম্পটি খুঁজে পেয়েছিল, যা তিনি স্থানীয় স্ট্যাম্প সংগ্রাহকের কাছে বিক্রি করেছিলেন। ১৫০ বছর পর, আজকের সময়ে, সেই একটি ডাকটিকিট বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ডাকটিকিট হয়ে উঠেছে। জুন ২০২১ পর্যন্ত, এই স্ট্যাম্পটি ৯ জনের কাছে ছিল কিন্তু এখন এটি স্ট্যানলি গিবন্স নামে একটি কোম্পানি কিনেছে। কোম্পানিটি শেয়ার আকারে স্ট্যাম্প বিক্রি শুরু করে এবং এখন পর্যন্ত ৮০ হাজার পিস অর্থাৎ ৮০ হাজার শেয়ার বিক্রি হয়েছে।
No comments:
Post a Comment