'এদের ডবল ইঞ্জিন মানে একটা সিবিআই, আরেকটা ইডি', ত্রিপুরার আগরতলায় জনসভা থেকে বিজেপিকে নিশানা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আগামী ১৬ তারিখ ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। তারই প্রচারে সোমবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ত্রিপুরা যান অভিষেক। এরপর মঙ্গলবার সেখানে রোড শোয়ের পর জনসভা করেন তারা। সভা মঞ্চ থেকে তৃণমূলের তরফে এক গুচ্ছ প্রতিশ্রুতি সহ বিরোধীদের চওড়া আক্রমণ করেন অভিষেক।
এদিন কার্যত হুঙ্কার দিয়ে তিনি বলেন, 'আমাকে যেখানে, যে পাড়ায় আসতে বলবেন, আমি আসবো। বুকে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুষ্টিবদ্ধ হাত ও মা-মাটি-মানুষের জয়ধ্বনি নিয়ে ত্রিপুরার বুকে ঢুকে বিজেপির চক্রব্যূহ চূর্ণ-বিচূর্ণ করব।'
তিনি বলেন, 'এতদিন ধরে কংগ্রেস-সিপিএম অন্যান্য রাজনৈতিক দল এই ত্রিপুরার মাটিতে রয়েছে, রাজনৈতিক কর্মসূচি করছে। কিন্তু যবে থেকে তৃণমূল কংগ্রেস পা রেখেছে, আমরা আমাদের লড়াই-আন্দোলন তীব্রতার করেছি। আমি বিপ্লব দেবকে বলেছিলাম যে, আপনি বিপ্লব দেব নন, বি-ক্ষোভ দেব। বিজেপি তার তিন মাসের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী বদলেছে। তৃণমূলের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। ত্রিপুরার মানুষের দাবীকে মান্যতা দিয়েছে।'
অভিষেক বলেন, আগামী দিন ত্রিপুরায় আমরা শান্তি-শৃঙ্খলা, উন্নয়ন, সমৃদ্ধি চাই। তৃণমূলই এর একমাত্র বিকল্প। তার কারণ দীর্ঘ ২৫ বছর আপনারা সিপিএমের রাজত্ব দেখেছেন, একদিকে ত্রিপুরা আরেক দিকে বাংলা; ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। আর একদিকে এখন দেখছেন সিপিএমের হার্মাদরা বিজেপির জল্লাদ হয়ে আপনার বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গুন্ডামি-ভন্ডামি করে বেড়াচ্ছে। এই সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশের প্রতিকার-সমাধান চাইলে বিকল্প কংগ্রেস বা সিপিএম নয়, বিকল্প একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস।'
বিরোধীদের তোপ দেগে তিনি বলেন, 'সিপিএমের নেতৃত্বে ত্রিপুরা যেভাবে ২৫ বছর সন্ত্রাসবাদী দুর্নীতিগ্রস্তদের এবং দুঃশাসনকারীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছিল। আজ বিজেপির জল্লাদদের কারণে ত্রিপুরা অর্থনৈতিকভাবে জর্জরিত। এই পরিবেশ থাকলে এই রাজ্যে কোনও দিন কর্মসংস্থান হবে না, শিল্প আসবে না, উন্নয়ন হবে না। রাস্তাঘাট নেই, হাসপাতালে ডাক্তার নেই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিকাঠামো কী অবস্থায় পড়ে রয়েছে আমরা সকলেই দেখেছি, এই হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টির ডবল ইঞ্জিনের নমুনা?'
অভিষেক বলেন, 'পাঁচ বছর আগে আপনাদের বলেছিল ভোট দিন, আমরা উন্নয়ন করব। এদের ডবল ইঞ্জিন মানে কি? মানে হচ্ছে একটা ইঞ্জিন সিবিআই, আরেকটা ইঞ্জিন ইডি। এখানে রাজ্যও চুরি করবে আর কেন্দ্রও চুরি করবে। আর কোনও চোর কেউ কাউকে ধরবে না। এটাই হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি ডবল ইঞ্জিন সরকারের নিদারুণ পরিদর্শন।'
তৃণমূল সাংসদ বলেন, বাংলার সিঙ্গেল ইঞ্জিন এখানে প্রতিষ্ঠা হবে। যেভাবে বাংলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিল্প থেকে শিক্ষা থেকে ১০০ দিনের কাছ থেকে উন্নয়নমূলক প্রকল্প মানুষের বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে গেছে, আমাদেরও শপথ নিতে হবে, আগামী মার্চ মাস থেকে দুয়ারে গুন্ডা নয়, দুয়ারে সরকার চাই।'
এছাড়াও এদিন ত্রিপুরাবাসীকে জোড়া ফুলে ভোট দেওয়ার আবেদন করেন অভিষেক। তিনি বলেন, 'প্রার্থী যেই হোক, আপনারা জোড়া ফুলে মাথা উঁচু করে ভোট দিন। কারণ যে কোনও প্রার্থীকে জোড়া ফুলে ভোট দেওয়া মানে সরাসরি মমতা কবন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দেওয়া, জোড়া ফুলের হাতকে শক্ত করা।'
No comments:
Post a Comment