রাজ্য সরকার আসামে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে এবং এর আওতায় গ্রেপ্তারও করা হচ্ছে। বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সরকারের ক্র্যাকডাউনের অংশ হিসাবে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৭৮ জন মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যখন রাজ্য জুড়ে ২৫০০ জনেরও বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত গ্রেপ্তারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ওই সময় পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৪৪২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ৭৮ জন নারী।
আসামের মহাপরিদর্শক (আইন-শৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমার ভুঁইয়া জানিয়েছেন, ধৃত মহিলারা হলেন তারা যারা বাল্যবিবাহের "সুবিধা" হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে৷ তিনি বলেন, “সব মামলায় এ ধরনের স্বজন বা তৃতীয় পক্ষকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এসবই করা হয়েছে সেসব ক্ষেত্রে যেখানে তদন্তের সময় এমন কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে যে এই লোকেরা বিয়েতে 'সুবিধা' করার কাজ করেছে।"
রাজ্য সরকার জানিয়েছে, যারা ১৪ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে করে তাদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা (POCSO) আইনের অধীনে মামলা করা হবে এবং যারা ১৪-১৮ বছর বয়সী মেয়েদের বিয়ে করবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করা হবে। বাল্য বিবাহ নিষেধাজ্ঞা আইন, ২০০৬।
আসামের অধিকাংশ জেলায় কোনও নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া বিস্তারিত তথ্যে, ৩৫টি জেলা এবং গুয়াহাটির মধ্যে নয় জন নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাক্সার এসপি রাজেন সিং জানিয়েছেন, কথিত বাল্যবিবাহের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত মহিলারা হয় স্বামীর মা বা স্ত্রীর মা।
তিনি বলেন, “তারা মূলত বাল্যবিবাহের সহায়ক। এর মধ্যে কেউ বরের মা, আবার কেউ কনের মা। যারা এ ধরনের বিয়ে করছে তাদেরও আমরা গ্রেপ্তার করছি। যারা বাল্যবিবাহের সাহায্যকারী, সে মা, বাবা বা উদযাপনকারী সকলকেই আমরা গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।”
এদিকে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের মধ্যেই পুলিশ এখন অভিযুক্তদের আটকে রাখতে বাড়তি জেলখানার ব্যবস্থা করছে। গোয়ালপাড়া ও কাছাড় জেলায় এমন দুটি কারাগার ইতিমধ্যেই প্রস্তুত রয়েছে। আসামের বেশ কয়েকটি জেলা থেকে অভিযুক্তদের ইতিমধ্যেই গোয়ালপাড়ায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে, এমনই আরেকটি অস্থায়ী কারাগার তৈরি করা হচ্ছে কাছাড়ে।
কাছাড়ের পুলিশ সুপার নোমল মাহাট্টা পিটিআই-কে বলেছেন, “আমরা একটি অস্থায়ী কারাগার তৈরির অনুমতি পেয়েছি। এটি শিলচরের কাছে একটি অকার্যকর বিদ্যমান সরকারি কমপ্লেক্সে স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, ভবন ও অন্যান্য অবকাঠামো ইতিমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে এবং এখন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মাহাট্টা বলেন, বিদ্যমান কারাগারের জায়গা ফুরিয়ে গেলে অস্থায়ী কারাগারটি ব্যবহার করা হবে।
No comments:
Post a Comment