বর্তমানে কলকাতায় চলছে বইমেলা। সোমবার বইমেলায় চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। কলকাতার সেন্ট্রাল পার্ক ফেয়ার, সল্টলেক-এ সন্ধ্যায় কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা কমপ্লেক্সে মাইক্রোফোনে ঘোষণা করা হয়, "যেখানেই থাকুন, খোঁজ কেন্দ্রে আসুন।" এখানে এবং আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।" সবাই ভেবেছিল হয়তো কারও পরিবার বা সঙ্গী নিখোঁজ, কিন্তু হঠাৎ মাইকে তার আওয়াজ ভেসে উঠল "ম্যাও"। কলকাতা বইমেলায় পৌঁছে যাওয়া বইপ্রেমীরা এই কন্ঠ শুনে অবাক।
তার নাম কেউ জানত না। গলায় লাল সুতো বাঁধা ছিল। কেউ ঠাট্টা করে বললো, "তোমার নাম কি?" সে উত্তর দিল.. "ম্যাও"। এদিকে এক যুবতী সেখানে পৌঁছে তাকে তুলে নিল।
ত্রিশা চৌধুরী পেশায় একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। সে বিড়ালটিকে একা ছেড়ে যেতে প্রস্তুত ছিল না। বিধাননগর পুলিশ মেলা প্রাঙ্গণে একটি কন্ট্রোল রুম খুলেছে। বিড়ালটিকে সেখানে নিয়ে আসেন ত্রিশা।নিখোঁজ শিশুর দায়িত্ব নেওয়ার দায়িত্ব পুলিশ কন্ট্রোল রুমের, কিন্তু বিড়ালের দায়িত্ব কে নেবে। পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে ত্রিশাকে বলা হয়, 'দেখুন, বিড়াল রাখার অধিকার আমাদের নেই। আপনি কি বরং বাড়িতে নিয়ে যাবেন, এখানে আপনার নাম ঠিকানা লিখুন। মালিক এলে আমি আপনার সাথে যোগাযোগ করব।' তবে ত্রিপুরার বাসিন্দা ত্রিশা কলকাতার বিমানবন্দর এলাকায় থাকেন। বাড়িতে মাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, 'বইমেলায় একটা বিড়াল পেলাম, আনব?' কিন্তু মা বিড়াল আনতে রাজি হননি।
এদিকে, ততক্ষণে অনেকে মাছের পোনা ও বিস্কুট খাওয়ানোর চেষ্টা করলেও বিড়ালটি মালিককে না পেয়ে মন খারাপ করে। এদিকে বইমেলায় বিড়াল খুঁজে পাওয়ার খবর আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে বিধাননগর থানার কিছু লোক ত্রিশাকে বন দফতরের অফিসে যাওয়ার পরামর্শ দেয় এবং সেখানে বিড়ালটি জমা করা যেতে পারে। পরে যথাযথ প্রমাণসহ মালিককে নিয়ে যাবেন, কিন্তু ত্রিশা বনবিভাগের অফিস জানতেন না। তিনি তাকে নিয়ে আসার জন্য অনেক লোকের কাছে মিনতি ও অনুনয়-বিনয় করেছিলেন, কিন্তু লোকেরা হারিয়ে যাওয়া বিড়ালের মেজাজ দেখেছিল এবং কেউ তাকে তাদের কোলে নিতে সাহস করেনি। ঘণ্টাখানেক দৌড়ানোর পর অবশেষে মালিক বিড়ালটিকে পেলেন। বইমেলার ভিড়ে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটলেও প্রথমবারের মতো হারিয়ে গেল বিড়ালটি। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সেক্রেটারি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, এমন ঘটনার কথা শুনিনি, তবে শেষ পর্যন্ত বিড়ালটি তার মালিকের সন্ধান পেয়েছে।
No comments:
Post a Comment