আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ সহ একাধিক ইস্যুতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েতে ডেপুটেশন দিল সিপিএম। বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানার ব্যারাকপুর রোডের জগন্নাথপুর থেকে শুরু হয় সিপিএমের বিক্ষোভ মিছিল, শেষ হয় ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েত অফিসের সামনে। প্রধানকে ডেপুটেশন দেন তারা। ডেপুটেশন ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা।
সিপিএম নেত্রী গার্গী চট্টোপাধ্যায় বলেন, "পঞ্চায়েতগুলো দুর্নীতির আখড়া হয়েছে এবং আবাস যোজনার ঘর যাদের প্রাপ্য, তারা পায়নি। আমরা সেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলতে পঞ্চায়েতের সামনে এসেছি।" তিনি বলেন, "জব কার্ড নেই, ১০০ দিনের কাজের টাকা পাচ্ছে না, মাটি কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে, বাড়ী তৈরির টাকা পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। এটা (পঞ্চায়েত) একটা চোর-জোচ্চোর, লুটেরাদের আড্ডা হয়েছে।"
বাম নেত্রী বলেন, 'জনগণ পঞ্চায়েত ভোটে বুঝিয়ে দেবে, এই লুটেরাদের পঞ্চায়েত থেকে টেনে বের করবে জনগণ। আর উনি তো ভোট করতেই ভয় পাচ্ছেন। দেখেছেন না পৌরসভা ভোট কীভাবে দখল করেছিল!' পঞ্চায়েতেও কি সেই আশঙ্কা রয়েছে?- প্রশ্ন করতেই নেত্রীর সাফ জবাব, 'অবশ্যই আশঙ্কা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করব, আমরা লড়াই করব যাতে ভোট হয়।' পঞ্চায়েতে পাল্টা প্রতিঘাতের প্রশ্নেও তিনি বলেন, 'অবশ্যই পাল্টা হবে।'
ইছাপুর নীলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নরেন্দ্রনাথ দত্ত জানান, একশো দিনের কাজ হচ্ছে না কেন? বাংলা আবাস যোজনার ঘর, জব কার্ড সব সক্ষম ব্যক্তিদের দিতে হবে, প্রতিটি পরিবার যারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাওয়ার যোগ্য, তাদের টাকা দিতে হবে, স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে সকলকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে- এই ধরণের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ডেপুটেশন।
কটাক্ষ করে তিনি বলেন, "যাদের খেয়ে-দেয়ে কোনও কাজ থাকে না, সেরকম একটি দল হচ্ছে এই দল, যারা এসেছে ডেপুটেশন দিতে। যতগুলো পয়েন্টে আলোচনা হয়েছে, আমরা তথ্য চেয়েছি, কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। তাহলে কি করে বুঝব তারা বাস্তবটা অঞ্চল সম্পর্কে জানে! পুরো অজ্ঞ তারা। তাদের আমরা বলেছি, তোমাদের পরিবারের কেউ যদি কোনও কিছু পেয়ে না থাকে, আমাদের কাছে লিস্ট দিয়ে যাবে, তোমরা যাতে পাও তার ব্যবস্থা করে দেব।"
এই ডেপুটেশন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য এমনই দাবী প্রধানের। তিনি বলেন, "সামনেই নির্বাচন। পাঁচ বছরের শেষ প্রান্তে এসে এখন এই ডেপুটেশন। এখানে যা আলোচনা হবে সেটা একটু বাড়িয়ে বাইরে যেটা করছে; পুলিশ আটকেছে, এই করে মানুষের কাছে একটু গ্রহণযোগ্যতা পাবে। সারা বছর তো কোনও কাজ নেই তাদের।"
আগের বারের মত এবারে পঞ্চায়েতে লুট হলে প্রতিরোধ ও আঘাতের পাল্ট প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি সম্পর্কে পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, "এই দলের কাছে সেই জ্ঞান আমরা শুনব না।" তাঁর অভিযোগ, নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতে রিগিং করে বিগত দিনে জিতেছে বামেরা।
প্রধান বলেন, "আমরা স্বচ্ছ ভাবে পঞ্চায়েতে ভোট করি, তার নিদর্শন সারা এলাকার লোক জানে। তাই ওদের কাছে সেই জ্ঞান শুনে আমরা চলি না। আমাদের দলেরই নির্দেশ আছে যে, স্বচ্ছ ভাবে ভোট করতে হবে। যে প্রার্থী দাঁড়াবে সে জিতবে।"
No comments:
Post a Comment