চরম অমানবিকতা! ঘুমের ওষুধে মাকে নিস্তেজ করে ফুটপাতে ফেলে এলেন দুই ছেলে - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday 4 February 2023

চরম অমানবিকতা! ঘুমের ওষুধে মাকে নিস্তেজ করে ফুটপাতে ফেলে এলেন দুই ছেলে


বৃদ্ধা মাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ফুটপাতে ফেলে রেখে যাওয়ার অভিযোগ উঠল দুই গুণধর ছেলের বিরুদ্ধে। নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ার রথতলা এলাকার। অভিযোগ, মাঝরাতে গঙ্গার ওপারে ভাটপাড়ার একটি স্কুলের সামনে মাকে ফুটপাতে ফেলে যায় দুই ছেলে। সেখানে দুই রাত কাটানোর পর স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ও পুলিশের উদ্যোগে বৃদ্ধাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর শুক্রবার পুলিশ দুই ছেলেকে ডেকে মুচলেকা লিখিয়ে বৃদ্ধাকে বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।  তবে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধার নাম ঊষারানি প্রামাণিক। বাড়ি হুগলির চুঁচুড়ার ঘটকপাড়ে। তিনি বলেন, আমার দুই ছেলে টিংকু ও মনোজ তাকে ভাটপাড়ায় রেখে গেছেন।  এলাকার লোকজন তাকে খাবার দেয়। পুলিশ আসে এবং হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, আমার স্বামী ব্যাংকে চাকরি করতেন। দুই ছেলে মাছের ব্যবসা করে। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর আমি তাদের সংসারে বোঝা হয়ে যাই।"


ভাটপাড়ার পুলিশ আধিকারিক জানান, এলাকার লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে গেলে বৃহস্পতিবার রাতে ওই বৃদ্ধাকে স্থানীয় রাজলক্ষ্মী বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে ফুটপাতে বসে থাকতে দেখা যায়। তিনি বাড়ি ফিরতে চান।  প্রথমে তাকে চিকিৎসার জন্য ভাটাপাড়া সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার বাড়ির ঠিকানা জানার পর এবং পুরো ঘটনা শুনে চুঁচুড়া থানায় যোগাযোগ করা হয়। শুক্রবার বৃদ্ধার দুই ছেলেই ভাটপাড়া থানায় হাজির হয়।  


ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, “দুই ছেলেকে সতর্ক করা হয়েছে যেন মাকে এভাবে হেনস্থা না করা হয়।  বৃদ্ধা কেমন আছেন, আমি একটানা খোঁজ খবর নিতে থাকব।"  


স্থানীয় বাসিন্দা অমিত চক্রবর্তী, কুণাল দে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করতে পুলিশে খবর দেন। অমিত বলেন, "আমি ভাবতেই পারি না যে, কেউ এমন করতে পারে।"


উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে তার স্বামীর মৃত্যুর পর, তিনি খুব কষ্টে দুই সন্তানকে লালন-পালন করেছিলেন।  এখন দুই ছেলেই মাছের ব্যবসায় জড়িত থাকলেও বৃদ্ধা মাকে দেখাশোনা না করে তাকে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ। বৃদ্ধা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ঘুমের ওষুধ খাইয়ে আমার দুই ছেলেই আমাকে এখানে রেখে পালিয়ে গেছে। 


যদিও বড় ছেলে টিংকু বলেন, 'মাকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। সময়মতো ওষুধ না খেলে মাথা ঠিকমতো কাজ করে না। প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসা করুন তারা মায়ের কতটা খেয়াল রাখি, কিন্তু আমি তাঁকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে পারি না। আমি এ সম্পর্কে জেনেই ছুটে এসেছি। পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি মা হাসপাতালে আছেন।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad