কংগ্রেসের ঘর ভাঙল তৃণমূল! তুঙ্গে তরজা

মালদা: কংগ্রেসের পাল্টা যোগদান কর্মসূচি তৃণমূলের। স্থানীয় নেতার সাথে তৃণমূলে যোগ দিলেন প্রায় তিন শতাধিক কংগ্রেস কর্মী। যোগদান কর্মসূচি থেকে বিরোধীদের কার্যত এক হাত নিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের দাবী অধিকাংশ বুথে বিরোধীরা প্রার্থী খুঁজে পাবে না। যদিও এই যোগদানকে ভুয়ো বলে দাবী কংগ্রেসের। পাল্টা তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি এবং কংগ্রেস। যোগদান, পাল্টা যোগদান ঘিরে তুঙ্গে তরজা। 

সোমবার রাতে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রাধিকাপুর বুথে অনুষ্ঠিত হয় এই যোগদান কর্মসূচি। উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান, সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাউসার আলম, উপ-প্রধান ওয়াহেদুর রহমান সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা কসিমউদ্দিনের সঙ্গে তিন শতাধিক কর্মী কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেয় এদিন। উল্লেখ্য, কসিমউদ্দীন গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। যোগদানকারীরা জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে সামিল হতে তারা তৃণমূলে যোগ দিলেন।

যোগদানকারী কসিমউদ্দিন বলেন, 'আমি দীর্ঘদিন কংগ্রেস করতাম। কিন্তু ওখানে মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না। তাই তৃণমূলে যোগদান করলাম।'

এছাড়াও এদিন এই যোগদান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মঞ্চ থেকে বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান। তিনি বলেন, বিরোধীরা প্রার্থী খুঁজে পাবে না। মানুষকে হাতে-পায়ে ধরছে প্রার্থী করার জন্য। বিজেপি ৭৫ শতাংশ বুথে প্রার্থী দিতে পারবে না। কংগ্রেস-সিপিআইএম জোটও অনেক জায়গায় প্রার্থী খুঁজে পাবে না।' খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, 'এখন বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিআইএম অনৈতিক জোট করছে।'

তবে, তৃণমূলকে এর পাল্টা দিতে ছাড়েনি কংগ্রেস এবং বিজেপি। বিজেপির মতে, তৃণমূলের এই মুহূর্তে সব থেকে মাথা ব্যাথার কারণ হল তারা। তাই তৃণমূল বিজেপিকে নিয়ে এত ভাবছে। অন্যদিকে কংগ্রেসের দাবী, তাদের দল থেকে কেউ তৃণমূলে যোগ দেয়নি। চারিদিকে তৃণমূলে ভাঙণ হচ্ছে, তাই নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এই ধরণের ভুয়ো যোগদান কর্মসূচি।'

অঞ্চল কংগ্রেসের সভাপতি আব্দুস শোভান বলেন, 'আমরা খোঁজ নিয়েছি কংগ্রেস থেকে কেউ তৃণমূলে যোগ দেয়নি বরং এখন তিহার জেল বড় করতে হবে কারণ গোটা তৃণমূল দলটা তিহার জেলে থাকবে। আগামী দিনে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসছে। পঞ্চায়েত ভোটে সেটা প্রমাণ হয়ে যাবে।'

উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, 'তৃণমূলের সব থেকে মাথা ব্যথার কারণ বিজেপি। কারণ ওরা জানে বিজেপি একমাত্র ওদের হারাতে পারবে। তাই বিজেপিকে নিয়ে এত মাথা ব্যথা। কংগ্রেস সিপিআইএমের সঙ্গে আমাদের জোটের কোনও ব্যাপার নেই। মানুষ তৃণমূলকে হারানোর জন্য যাকে ভোট দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছে তাকে দিচ্ছে।'

অপরদিকে, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, 'কংগ্রেস থেকে এদিন ৩০০ জন আমাদের দলে যোগ দিলেন। পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারবে না। ওদের প্রার্থী নেই। বিজেপি ৭৫ শতাংশ বুথেই প্রার্থী খুঁজে পাবে না। কংগ্রেস সিপিআইএম জোটের ও একই অবস্থা। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে আছে।'

প্রসঙ্গত, একদিন আগেই মহেন্দ্রপুর অঞ্চলে যোগদান কর্মসূচি করে কংগ্রেস। কংগ্রেসের দাবী, তৃণমূল এবং বিজেপি থেকে প্রায় ৫০০ কর্মী যোগ দিয়েছে তাদের দলে। তারপরেই এক দিনের মধ্যে পাল্টা যোগদান কর্মসূচি তৃণমূলের। আর যা নিয়ে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের মধ্যে শুরু হয়েছে বাকবিতণ্ডা। পঞ্চায়েত ভোটের আগেই তুঙ্গে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ।