মালদা: তৃণমূল নেতার বাড়ির পেছনে বাঁশ ঝাড় থেকে মিলল দুটি তাজা বোমা। বুধবার মালদহের চাঁচলের নুরগঞ্জের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আর এই ঘটনা ঘিরেই প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। কটাক্ষ পাল্টা কটাক্ষে সরগরম জেলার রাজনীতি। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।
পুলিশ জানায়, যার বাড়ির পাশ থেকে বোমা উদ্ধার হয়েছে তার নাম ইউসুফ আলী। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের নুরগঞ্জ বুথ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম সংগ্রহ করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তিনি যাতে প্রার্থী না হন সে জন্য বদনাম করতে বর্তমান তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী দিলদার হোসেন ওই বোমা রেখেছে বলে অভিযোগ করেন ইউসুফের। যদিও দিলদার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কে বা কারা তাকে ফাঁসানোর জন্য একাজ করেছে বলে দাবী দিলদারের। গোটা ঘটনা সামনে আসতেই খোঁচা বিরোধীদের। শুরু রাজনৈতিক তরজা।
ইউসুফ আলী, প্রস্তাবিত তৃণমূল প্রার্থী বলেন, 'দিলদার হোসেন বহিরাগত, আমরা বিশেষ করে আমি প্রতিবাদ করেছি কোন বহিরাগতকে এখানে তৃণমূলের তরফে টিকিট দেব না।' তাঁর স্ত্রী অর্থাৎ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএম থেকে এসে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ইউসুফ বলেন, 'আমি নিজেও একজন প্রার্থীর নাম দিয়েছি। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কথা বললে লোক মারফৎ আমাকে থানা পুলিশে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় দিলদার হোসেন। কয়েকদিন আগেও আমাকে বোম রেখে ফাঁসানোর হুমকি দেয়।'
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে দিলদার হোসেন বলেন, 'আমি সাতদিন পর আজ ফিরেছি কলকাতা থেকে। আর যে এসব বলছে, তিনি নিজে কংগ্রেসের ছেলে, এখন তৃণমূলে নাম লিখিয়েছে। তাঁর দাবী ৯৯ শতাংশ জন সমর্থন তার রয়েছে। দিলদার বলেন, 'মানুষই বলে দেবে কে গুন্ডা-বোমাবাজ, আর কে ভালো।' তিনি এই ঘটনার তদন্তের দাবী করেন।
এই ঘটনায় শাসক দলকে এক হাত নিয়েছে বিজেপি। চাঁচল১ বিজেপি কো-কনভেনার প্রসেনজিৎ শর্মা বলেন, 'এই সরকারের আমলে পশ্চিমবঙ্গ বোম ও আগ্নেয়াস্ত্রর আঁতুড়ঘড় হয়ে উঠেছে। আসন্ন ত্রিস্তর পঞ্চায়েত কে কেন্দ্র করে শাসক দলের যে দুই পদপ্রার্থীর নাম এসেছে, তাদের মধ্যে গণ্ডগোল এবং একে অপরের বাড়িতে বোম ছোঁড়াছুড়ি করছে। এই ঘটনা রাজ্য জুড়ে ঘটছে। এই হার্মাদ ও দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তৃণমূলের নেতা বলে পুলিশ তাদের ধরছে না এবং আগামী পঞ্চায়েত যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে চলেছে, পশ্চিমবাংলার মানুষ বুঝতে পারছে।'
এই নিয়ে বিজেপিকে পাল্টা নিশানা করেছে তৃণমূল। চাঁচল ১ নং তৃণমূল ব্লক সভাপতি শেখ আফসার আলী বলেন, 'বিজেপির সব ভাঁওতাবাজি গল্প। প্রশাসনের ব্যাপার প্রশাসন দেখবে, বিজেপির এর মধ্যে কথা বলার দরকার নেই।' তিনি বলেন, 'তৃণমূল আতঙ্ক ছড়ায় না সাধারণ মানুষের ভোট নিয়েই নির্বাচন জিততে চায়। এ নিয়ে বিজেপিকে মাথা ঘামাতে হবে না।'
পাশাপাশি বোমার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'বোমা থাকলে আইনগত ব্যাপার সেটা পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করবে। যারা প্রকৃত দোষী তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবেন।' তিনি বলেন, 'প্রার্থীর নাম বুথে বসে করা হয়েছে। যাদের নাম এসেছে সেগুলো আমরা রাজ্য দফতরে পাঠাব এবং তার মধ্যে থেকে একজনের নাম অনুমোদন হয়ে আসবে। প্রার্থী মনোনীত করবে রাজ্য দফতর এবং এটাই সবাইকে মেনে নিতে হবে। দলের মধ্যে বিভেদ ঠিক নয়।'
No comments:
Post a Comment