রাজ্যসভার সভাপতি সকলের জন্য 'আম্পায়ার এবং রেফারি', কিন্তু তিনি শাসক দলের 'চিয়ারলিডার' হতে পারেন না। রাহুল গান্ধীর সমালোচনা করার জন্য বৃহস্পতিবার উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখঢড়কে এভাবেই আক্রমণ শানাল কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশও বলেন, ধনখড়ের মন্তব্য হতাশাজনক। তিনি বলেন, সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিকে যেকোনও দলের প্রতি কুসংস্কার ও পক্ষপাত মুক্ত হতে হবে।
উল্লেখ্য, পরোক্ষভাবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সমালোচনা করে ধনখড় বলেছিলেন যে, 'ভারতীয় সংসদে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়, বিদেশী মাটি থেকে এটা বলা মিথ্যা প্রচার এবং দেশের জন্য অপমান।'
তিনি আরও বলেন, যখন ভারতের 'জি-২০'-র সভাপতিত্ব করার একটি গর্বিত মুহূর্ত রয়েছে, এমন সময়ে একজন সংসদ সদস্য দ্বারা ভারতীয় গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক ইউনিটের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা মেনে নেওয়া যায় না।' ধনখড় বলেন, তিনি এই বিষয়ে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত হতে পারবেন না। যদিও রাহুল গান্ধীর নাম নেননি উপ-রাষ্ট্রপতি। বরিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করণ সিং-এর মুণ্ডক উপনিষদ ভিত্তিক একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বৃহস্পতিবার রাতে জারি করা এক বিবৃতিতে বলেছেন, কিছু অবস্থান রয়েছে যেখানে আমাদের পক্ষপাত, দলের প্রতি ঝোঁক থেকে মুক্ত থাকতে হবে। উপরাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যসভার সভাপতি পদও এর মধ্যে রয়েছে। জয়রামের মতে, রাহুল গান্ধী সম্পর্কে ভাইস প্রেসিডেন্টের বক্তব্য আশ্চর্যজনক এবং তিনি সরকারকে রক্ষা করেছেন, যা হতাশাজনক।
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাহুল গান্ধী বিদেশে এমন কিছু বলেননি যা তিনি এখানে বহুবার বলেননি। তিনি অন্য লোকেদের মত নন যারা যেখানে বসেন সেই অনুযায়ী তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেন। তিনি জোর দেন, রাহুল গান্ধীর বক্তব্য বাস্তব এবং স্থল বাস্তবতার প্রতিফলন করে। রমেশ বলেন, গত দুই সপ্তাহে, সংসদের ১২ জন সদস্যকে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল কারণ তারা সংসদে তাদের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন।
রমেশ দাবী করেন, যারা ভিন্নমত প্রকাশ করেন তাদের শাস্তি দেওয়া হয়। জরুরি অবস্থা ঘোষণা না হলেও সরকারের পদক্ষেপ তেমন নয়, যেমনটা সংবিধানকে সম্মান করা সরকারের পদক্ষেপ। তিনি বলেন, 'উপ-রাষ্ট্রপতির বর্তমান বক্তব্য ও অতীতের কিছু মন্তব্য এ বিষয়টি প্রমাণ করেছে।
ধনখড়কে নিশানা করে রমেশ বলেন, “রাজ্যসভার সভাপতি হলেন আম্পায়ার, রেফারি, বন্ধু এবং সকলের পথপ্রদর্শক। তিনি কোনও ক্ষমতাসীন দলের 'চিয়ারলিডার' হতে পারেন না। কোন দলকে তারা রক্ষা করেছেন তার ভিত্তিতে ইতিহাস বিচার করে না, তারা জনগণের সেবা করার সময় যে মর্যাদার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে তার ভিত্তিতে।
No comments:
Post a Comment