বাবার বিরুদ্ধে যৌন শোষণের অভিযোগ করলেন দিল্লী মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল। শনিবার তিনি এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন। এদিন এক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যোগ দেন স্বাতী। এরপর সেখানে সংবাদমাধ্যমেরও মুখোমুখি হন তিনি।
এদিন স্বাতী বলেন, 'আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার বাবা আমাকে যৌন নির্যাতন করতেন। তিনি আমাকে মারতেন, এজন্য আমি খাটের নিচে লুকিয়ে থাকতাম। তিনি ঘরে এলে খুব ভয় পেতাম। আমি খুব ছোট ছিলাম। অনেক সময় বিছানার নিচে লুকিয়ে যেতাম সারা রাত প্ল্যানিং করতাম কীভাবে মহিলাদের অধিকার দেওয়ানো যায়। শিশু ও মহিলাদের দের শোষণকারীদের শিক্ষা দেব।'
স্বাতী আরও বলেন, 'এখনও মনে আছে। আমাকে মারতে এলে আমার চুলের বিনুনি চেপে ধরে দেওয়ালে মাথা ঠুকতেন, তাতে আঘাত লেগে রক্ত ঝরতে থাকত। অনেক কষ্ট পেতাম। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি একজন মানুষ যখন অনেক অত্যাচারের শিকার হয় তখনই সে অন্যের কষ্ট বুঝতে পারে। তবেই তার ভিতরে এমন আগুন জেগে ওঠে, যার কারণে তিনি পুরো সিস্টেমকে নাড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। সম্ভবত আমার সাথে একই ঘটনা ঘটেছে এবং আমাদের সমস্ত অ্যাওয়ার্ড প্রাপকদের একই গল্প আছে।'
স্বাতী বলেন, 'এই ঘটনাটা ঘটেছিল যখন আমি খুব ছোট ছিলাম। আমি ৪র্থ শ্রেণিতে পড়া পর্যন্ত বাবার সাথেই ছিলাম। তখন পর্যন্ত এরকম অনেকবার হয়েছে।'
উল্লেখ্য, স্বাতী মালিওয়াল দিল্লী কমিশন ফর উইমেন (DCW)-এর চেয়ার পারসন। ২০২১ সালে, স্বাতীকে টানা তৃতীয়বারের মতো DCW-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়। দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লী কমিশন ফর উইমেনের বর্তমান দলকে দ্বিতীয় মেয়াদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছিলেন। স্বাতী ২০১৫ সাল থেকে ক্রমাগত দিল্লী কমিশন ফর উইমেন-এর প্রধান ছিলেন৷ সম্প্রতি, স্বাতী যখন দিল্লির রাস্তায় মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি জানার দাবী করেন তখন তিনি লাইমলাইটে আসেন৷
স্বাতী ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন, 'গভীর রাতে তিনি দিল্লীতে মহিলাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছিলেন। সেই কারণেই মদ্যপ অবস্থায় এক গাড়িওয়ালা তার সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন। তিনি তাকে ধরে ফেললে চালক তাকে গাড়ির আয়নায় হাত আটকে টেনে নিয়ে যায়।' তিনি আরও বলেন, 'ঈশ্বর তাঁর জীবন রক্ষা করেছিলেন। দিল্লীতে যদি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন নিরাপদ না থাকেন, তাহলে পরিস্থিতিটা ভাবুন।'
বলা হয়, স্বাতীকে ১০ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান গাড়িচালক। ঘটনাটি ঘটে দিল্লী এইমসের কাছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। যদিও এই স্ট্রিং অপারেশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।
No comments:
Post a Comment