'We Quit! আমরা ৪ জন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমাদের মৃত্যুর জন্য ২ জন দায়ী।'- মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে হোয়াটসঅ্যাপে পরিচিতদের কাছে এই বার্তা পাঠানো হয়। মেসেজ দেখার পর কেউ কেউ দ্রুত যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ততক্ষণে সব শেষ। দুর্গাপুরে দুই শিশুসহ এক দম্পতির রহস্যমৃত্যুতে গোটা শহর তোলপাড়। রবিবার সকালে বাড়ি থেকে ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। দুই সন্তান সহ স্ত্রীর দেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
সূত্রের খবর, মৃত্যুর আগে তিনি মোবাইল ফোনে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পরিবারের কয়েকজনকে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে একটি বার্তাও দিয়েছিলেন। এ নিয়েও রয়েছে রহস্য।
রবিবার সকালে বাড়ি থেকে মিলনপল্লির বাসিন্দা অমিত মণ্ডলের দেহ উদ্ধার হয়। জানা গেছে, বাড়ির মেঝেতে তার স্ত্রী রূপা মণ্ডল(২৭), সাত বছরের ছেলে নিমিত ও দেড় বছরের মেয়ে নিশিতা-র মরদেহ পড়ে ছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দুর্গাপুর থানার পুলিশ। ততক্ষণে বাড়ির বাইরে উৎসুক মানুষের ভিড় জড়ো হতে থাকে। সবার চোখে মুখে নানান প্রশ্ন। তবে তদন্তের স্বার্থে ওই বাড়িতে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। খুন নাকি আত্মহত্যা-এই নিয়ে রহস্য ঘনাচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দাদের অনুমান, এটা আত্মহত্যা নয়, খুন।
অমিতের হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় লেখা ছিল, 'We Quit! আমরা ৪ জন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমাদের মৃত্যুর পেছনে ২ জন দায়ী। আমার মা ও বর্ষা। আজও বুঝলাম না কেন মা, বর্ষা আর কৃষ্ণ আমাদের এত হিংসা করে। আমরা তোমাদের কোনো ক্ষতি করিনি, বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমি তোমাদের জন্য সব করেছি। এখন বুঝবে আমাদের ছাড়া তোমার কি হয়! এখন তুমি তোমার ভাই ও বোনদের সাথে শান্তিতে থাকো, আমরা চলে যাচ্ছি, আমাদের তোমার প্রয়োজন নেই।"
স্থানীয় বাসিন্দা তপন পাল বলেন, 'সম্পত্তি নিয়ে মায়ের সঙ্গে ওই যুবকের প্রায়ই ঝগড়া হতো। দেহটি যে অবস্থায় পাওয়া গেছে তা দেখে মনে হচ্ছে এটি কোনও ভাবেই আত্মহত্যা নয়, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। প্রথমে খুন, পরে ফাঁসি।' আরেক বাসিন্দা, দেবাশীষ ব্যানার্জি বলেন, “ঘাড়ে দড়ি থাকলেও পা মাটিতে ছিল। তার হাত বাঁধা ছিল। তিনি একই অবস্থায় পড়ে ছিল। তিনি কোন ষড়যন্ত্রের শিকার, তা আমরা বুঝতে পারছি না। আমরা পুলিশের সুষ্ঠু তদন্ত চাই। প্রয়োজনে সিবিআই তদন্ত করুক। যারা এমন জঘন্য অপরাধ করেছে তাদের শাস্তি হওয়া উচিৎ।' গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
No comments:
Post a Comment