বৃদ্ধা স্ত্রী গুরুতর অসুস্থতায় ভুগছেন। এই বয়সে বেশি শব্দ সহ্য করতে পারে না। তাই তিনি শান্তির সন্ধানে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, কিন্তু তারপরও আওয়াজ পিছু ছাড়ছে না, কারণ অভিনেতা তথা সাংসদ দীপক অধিকারীর (দেব) ফ্ল্যাটটি আবাসনের টপ ফ্লোরে। সেখানে দেব এন্টারটেইনমেন্ট ভেঞ্চারস নামে একটি অফিস খুলছেন তিনি। অফিসে কোলাহল ও বিকট শব্দে তাঁদের শান্তিতে বিঘ্ন ঘটে। এমনই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে দেবের বিরুদ্ধে মামলা করলেন ৭০ বছর বয়সী এক দম্পতি।
২০১৫ সালে, অবসরপ্রাপ্ত জকি নিকোলাস বার্ড দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। তিনি, তার স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে ২৮ তলায় শান্তিতে থাকতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ফ্ল্যাটটি কেনার পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়। তার ঠিক উপরেই অভিনেতা দেবের ফ্ল্যাট। জানা গেছে, অভিনেতা সেখানে অফিস স্থাপনের পর রেকর্ডিং সহ বেশ কিছু কাজ চলছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে নিকোলাস বার্ডের স্ত্রীর ব্রেন স্ট্রোক হয়। নিকোলাসের দাবী, দেবের ফ্ল্যাটে বিকট শব্দে তার স্ত্রীর অসুস্থতা বাড়ছে। এ নিয়ে সরাসরি দেবের কাছে অভিযোগও করেছেন তিনি। তার মতে শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। সমস্যার সমাধান না হলে শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টে মামলা করেন তিনি। গত বছর এ বিষয়ে কলকাতা পুরসভার অবস্থান জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট। এ বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা।
তবে, অভিনেতা জানান, কাউকে তিনি হয়রান করেননি, সেখানে কোনও কাজ করা হয় না। যদিও অভিযোগকারীর মেয়ে কুকি বার্ডের অভিযোগ, দেবের ফ্ল্যাটে বেশ কিছু সিনেমার প্রচারের জন্য ছবি রয়েছে। দেব ফ্ল্যাটে থাকেন না, তবে এটি অফিস হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবী করেন তিনি।
এদিকে, হাউসিং আন্ডার-সেক্রেটারি (আবাসন উপসচিব) শোরগোলের কথা স্বীকার করেছেন। বৃদ্ধ দম্পতির পাশে রয়েছেন বলে জানান তিনি। রাতে ফ্ল্যাটের ভেতরে এ ধরনের কাজ করা উচিৎ নয়।
দম্পতির আইনজীবী পার্থ দেব বর্মণ জানান, পৌরসভার আইন অনুযায়ী আবাসিক ফ্ল্যাটে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রাখা যায় না। পৌর কর্পোরেশনের সিদ্ধান্তের পর তারা আবার হাইকোর্টে মামলা করবেন। পাঁচ বছর ধরে ব্রেইন স্ট্রোকে ভুগছেন স্ত্রী এবং বর্তমানে জীবনের শেষ মুহুর্তে তাঁকে শান্তি দিতে মামলার আশ্রয় নিয়েছেন বৃদ্ধ স্বামী।
No comments:
Post a Comment