কম খরচে অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য ভেড়া পালনকে সেরা ব্যবসা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু ভেড়ায় রোগের কারণে গবাদি পশু পালনকারীদের অনেক ক্ষতি হয়। এমন পরিস্থিতিতে রোগের সনাক্তকরণ এবং প্রতিরোধ উভয়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যাতে সময়মতো সমস্যার সমাধান করা যায়।
ভেড়ার রোগ
ভেড়া পালন ভারতে একটি প্রধান ব্যবসা। ভেড়া পালনও ছাগল পালনের মতোই। এ ব্যবসায় কম খরচে বেশি রোজগার থাকলেও এ ব্যবসায় পশু অভিভাবকদেরও অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। কারণ ভেড়ার অনেক রোগ আছে। অনেক সময় বেশি রোগে পশু মারা যায়। এ কারণে উল উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ভেড়া চাষিদের ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়।
১. পা ও মুখের রোগ- এই রোগটি ভাইরাস দ্বারা হয়। যে কারণে এটি একটি প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মুখ, জিহ্বা, ঠোঁট এবং এই রোগে আক্রান্ত প্রাণীর খুরের মাঝখানে ফোস্কা পড়ে। ভেড়া ও ছাগল ঘাস খেতে পারে না এবং দুর্বল হয়ে পড়ে।
প্রতিরোধ- সংক্রমিত ভেড়াকে অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা করুন। ভেড়া পালনকারীকে ৬ মাসের ব্যবধানে এফএমডি টিকা দিতে হবে।
২. ব্রুসেলোসিস- এই রোগটি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়, এই রোগে গর্ভবতী ভেড়ার গর্ভপাত হয় ৪ বা সাড়ে ৪ মাসে, অসুস্থ ভেড়ার জরায়ুও পেকে যায়। যে সকল ভেড়া ও ছাগলের গর্ভপাত হয় তারা ডিম পর্যন্ত ছাড়ে না, এই রোগের কারণে ভেড়া ও ছাগলের অন্ডকোষ পেকে যায়, হাঁটুও ফুলে যায় এবং উর্বরতা কমে যায়।
প্রতিরোধ - ভেড়া পালনকারীকে পুরো পালকে ধ্বংস করতে হবে এবং নতুন প্রাণী বাড়াতে হবে। অনেক সময় ভেড়া পালনকারীরা তাদের ভেড়ার জেরের খোলায় গর্ভপাত করা মৃত ভেড়া ফেলে দেয় যাতে এই রোগের জীবাণু অন্যান্য পালগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ে। মেষপালকদের উচিত এই ধরনের মৃত মেষশাবক এবং জারকে গভীর গর্তে কবর দেওয়া।
৩. চর্মরোগ- এই রোগে অন্যান্য প্রাণীর মত ভেড়াতেও উকুন, মাছি ইত্যাদি পরজীবী হয়। এতে ভেড়ার চামড়ায় নানা ধরনের রোগ হয়, যার কারণে পশুর শরীর চুলকায় এবং পশু বারবার অন্য প্রাণীর শরীরের সাথে পাথর বা গাছের শরীরে আঁচড় দেয়।
প্রতিরোধ - প্রথমে ভেড়ার চামড়া পশুচিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করান। আক্রান্ত প্রাণীটিকে অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা করুন। পশুকে অন্তত দুবার কীটনাশক স্নান করাতে ভুলবেন না।
৪. গোলাকার কৃমি- এই কৃমিগুলি প্রধানত ভেড়ার অন্ত্রে সুতার মতো লম্বা এবং সাদা রঙের হয়। তারা ভেড়ার অন্ত্র থেকে রক্ত চুষতে শুরু করে। পশুর শরীর দুর্বল হতে থাকে। পশুর ডায়রিয়া হয়, পশম উৎপাদন কমে যায়, পশু খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়।
প্রতিরোধ- পেটের কৃমি মারার ওষুধ ভেড়াকে বছরে অন্তত তিনবার পশু চিকিৎসকের পরামর্শে দিতে হবে।
No comments:
Post a Comment