জীবিত শিশুকে মৃত ঘোষণা, চিকিৎসকের শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ সন্তানহারা স্বজনদের
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ২১এপ্রিল: জীবিত শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা, পরবর্তীতে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি, মৃত্যু হয় ওই শিশুর। আর চিকিৎসকের গাফিলতিতেই শিশু মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা, হাসপাতালে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদার ভালুকা গ্রামীণ হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এলাকারই এক পাঁচদিনের অসুস্থ শিশুকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন চিকিৎসক। এদিকে মৃত ভেবে বাড়িতে নিয়ে চলে গেলে শিশুটির পুনরায় শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে শুরু করে এবং হাত-পা নাড়া শুরু করে। এরপরই বাড়ির লোক তৎক্ষণাৎ আবার স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে রেফার করে দেয়।
কিন্তু সেখানে পৌঁছালেই চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করে শিশুটিকে। চিকিৎসকরা জানান, কিছুক্ষণ পূর্বে আনলেই বাঁচানো যেত শিশুটিকে। আর এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ঘেরাও করে গভীর রাতে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন গ্রামবাসীরা। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। গভীর রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে যায় ভালুকা ফাঁড়ির বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ভালুকা এলাকার গোবরা গ্রামের গ্রামের বাসিন্দা তপন মহালদারের পাঁচ দিনের শিশু বৃহস্পতিবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাড়ির লোক তাকে স্থানীয় ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসার আই ফারানা ইয়াসমিন শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন এবং তৎক্ষণাৎ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। বাড়ির লোক শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে এলে শিশুটি চোখ মেলে তাকায় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে শুরু করে। পুনরায় ওই শিশুকে ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্য-কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চাঁচল রেফার করেন। সেখানে ওই শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তবে চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসকরা জানান, আর কিছু ক্ষণ আগে আনলেই শিশুটিকে বাঁচানো যেত।
এই ঘটনা জানার পরে শিশুটির আত্মীয়-স্বজন এবং গ্রামবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়েন। চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্য-কেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এবং দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখেন। তাদের অভিযোগ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে শিশুটি মারা গেল। এর দায় কে নেবে। গ্রামবাসী ভালুকা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক আইফারানা ইয়াসমিনের উপযুক্ত শাস্তির দাবী তুলেছেন।
এদিকে অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক আইফারানা ইয়াসমিন জানান শিশুটিকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তার আগেই শিশুটি মারা গিয়েছিল।
বিক্ষোভকারী এক গ্রামবাসী নীরদ চৌধুরী জানান, ভালুকা পাচনের স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে আজকে এই শিশুর মৃত্যু হল। আমরা চাই ওই চিকিৎসকের যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়।'
এদিকে শিশু মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসার পরে ভালুকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে রাতভর বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীরা। তাদের দাবী, ভালুকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপযুক্ত চিকিৎসকের ব্যবস্থা করতে হবে, না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের শামিল হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন।
No comments:
Post a Comment