পার্কে পৌষ্যর মৃতদেহ কবর! উত্তেজনা এলাকায় - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday 18 April 2023

পার্কে পৌষ্যর মৃতদেহ কবর! উত্তেজনা এলাকায়


এক ব্যক্তির পৌষ্যর মৃতদেহ কবর দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার উত্তেজনা ছড়াল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসত ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিধান পার্ক এলাকায়। এলাকা সূত্রে জানা যায়, এদিন দুপুরে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের পৌরমাতা নীলিমা মণ্ডলের মেয়ের উপস্থিতিতে তারই বান্ধবীর বাড়ির পৌষ্যর মৃতদেহ এনে বিধান পার্কে কবর দেওয়া হয়। কিন্তু বিষয়টিকে কেউই ভালো চোখে দেখছেন না। কারণ প্রতিদিন বিকালে এলাকার শিশুরা পার্কে এসে খেলাধুলা করে। শুধু তাই নয়, এলাকার অনেক বয়স্ক মানুষই বিকালে এই পার্কে আসে ঘোরাফেরা করতে। এছাড়াও রাজ্যের মধ্যে বারাসতের কালী পূজা নাম করা, আর বারাসাতেরই একটি স্বনামধন্য ক্লাবের কালী পুজো হয় এই বিধান পার্কে। 



বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমের চোখে পড়লে তৎক্ষণাৎ এলাকার পৌরমাতাকে খবর দেওয়া হয় এবং পৌরমাতা ও এলাকার কিছু মানুষের সহযোগিতায় ওই মাটি কেটে সারমেয়োর দেহ বের করা এবং তা অন্যত্র পাঠানো হয়। যদিও এই বিষয়ে পৌরমাতা বলেন, 'আমার ওয়ার্ডের একজন মারা গেছেন আমি সেখানে ছিলাম, পৌষ্য কবর দেওয়ার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।'



এছাড়াও এদিন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় অন্য একটি জিনিস ধরা পরে যে, বিধান পার্কের গেটে তালা ঝোলানো এবং একটি নোটিশ বোর্ড টাঙানো আছে, যেখানে লেখা আছে সোমবার করে বিধান পার্ক বন্ধ থাকবে। এছাড়াও এলাকা সূত্রে জানা যায় যে, সোমবার করে পার্ক তালা দেওয়া থাকে এবং পার্কের চাবি থাকে ওয়ার্ডের পৌরমাতার কাছে অথবা তার ঘনিষ্ট এক ব্যক্তির কাছে। এখন প্রশ্ন যদি পার্কের চাবি নাই থাকে তাহলে দুপুরে তালা কিভাবে খোলা হল? আর পৌরমাতার মেয়ে ও তার বান্ধবীরা কীভাবে পার্কের ভেতরে ঢুকলেন?



এদিন এই বিষয়ে এলাকাবাসীরা বলেন, 'আমরা হিন্দু ধর্মের মানুষ, আমাদের এটা হিন্দু এলাকা। এখানে কবর দেওয়াটা আমরা সঠিক চোখে দেখছি না। কুকুর, বিড়াল মারা গেলে তাদের অবশ্যই কবর দেওয়া হয়, তাই বলে যেখানে আমাদের কালী পুজোর মণ্ডপ হয় এবং যে জায়গায় পুজো হয় সেই জায়গায় কবর দেওয়াটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। এই ন্যাক্কার জনক ঘটনার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই।' 



পাশাপাশি এলাকাবাসীদের একাংশ জানান যে, বারাসতের সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের উদ্যোগে সাংসদ তহবিলের টাকায় এই বিধান পার্কের উন্নয়ন করা হয় এবং সাংসদ নিজে এই পার্কের উদ্বোধন করেন। সেখানে দাঁড়িয়ে এটা এখন আর পার্ক নেই, পশুপাখিদের কবর স্থানে পরিণত হয়েছে। আর কিছুদিন পর থেকে পশুপাখিদের কবর স্থানের বোর্ড এই পার্কের বাইরে লাগানো হবে।



অতনু ঘোষ, বারাসত পৌরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি জানান, ঘটনাটি তিনি নিজে দেখেননি, শুনেছেন। তিনি বলেন, 'উনি যে কাজটা করেছেন, এটা আমি সমর্থন করি না। এটা ঠিক কাজ করেনি।' এই বিষয়ে কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলবেন, বলেও জানান।



তবে এই বিষয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বারাসত বিজেপি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিত্র জানান, 'শোনা যাচ্ছে যে সাংসদ তহবিলের টাকায় পার্কটিকে নতুন করে সাজানো হয়নি। শুধু পার্কের দেওয়ালে ও পার্কের ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় নীল সাদা রং করা হয়েছে। এখনও পার্কের বিভিন্ন জায়গায় নোংরা-আবর্জনা পরে আছে। এইসব লোক দেখানো, আগামী ভোটে জেতার জন্য মানুষকে দেখানো হচ্ছে যে, আমরা বিধান পার্কের জন্য কাজ করছি।" 


পাশাপাশি তিনি বলেন, 'আজকে হয়তো এই পার্কে মৃত জীবজন্তু কবর দেওয়া হচ্ছে দেখা যাবে আগামী দিনে এখানে মানুষও কবর দেওয়া হচ্ছে।'


ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন বাম কাউন্সিলর বলেন, '২০০৬ সালে উপ-পৌরপ্রধান থাকাকালীন আমি মানুষের থেকে সাহায্য চেয়ে এই পার্কটি গড়ে তুলেছি। এরপর আমার বিরোধী শক্তি আসার পর থেকে এই পার্কটিকে আস্তে আস্তে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আজকে যে ঘটনাটি ঘটেছে আমি তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad