পঞ্চায়েতের প্রাক্কালেই গেল জাতীয় দলের তকমা! তৃণমূলের জন্য কত লাভ-ক্ষতি - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday 11 April 2023

পঞ্চায়েতের প্রাক্কালেই গেল জাতীয় দলের তকমা! তৃণমূলের জন্য কত লাভ-ক্ষতি

 


২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে জাতীয় দলের মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার কারণে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।  বিধানসভা নির্বাচনের পর অন্যান্য রাজ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে তাদের পারফরম্যান্সের মূল্য দিতে হয়েছে।  অন্যান্য রাজ্যের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে পরাজিত হচ্ছিল এটা প্রায় আশা করা হয়েছিল যে তৃণমূল তার জাতীয় দলের মর্যাদা হারাবে।



 লোকসভা নির্বাচনের আগে তার মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার কারণে আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো তথা দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের তুলনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় রাজনীতিতে পিছিয়ে রয়েছেন।  নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত তার নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন চিহ্ন দিয়েছে।  প্রসঙ্গত, গত এক বছরে জাতীয় রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো ছিল না।  বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করার তাঁর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।


 

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে, নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও আরও তিনটি রাজ্যে রাজ্য দলের স্বীকৃতির কারণে তৃণমূলকে একটি জাতীয় দল ঘোষণা করেছিল।  কিন্তু গত সাত বছরে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে অন্যান্য রাজ্যে লাগাতার ধাক্কা খেতে হয়েছে।  মণিপুর, অরুণাচলের মতো রাজ্যে তৃণমূল রাজ্য দলের খেতাব ধরে রাখতে ব্যর্থ হলেও আসাম বা গোয়ায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।  এর পরে, তারা ২০২২ সালে মণিপুর এবং এই বছর ত্রিপুরায় একটি আঞ্চলিক দল হওয়ার শর্ত পূরণ করার সুযোগ হারিয়েছে।  ত্রিপুরায় মোট ভোটের নিরিখে NOTA থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল।  যে কারণে জাতীয় দল হওয়ার চারটি শর্তের একটিও পূরণ করতে পারেনি তৃণমূল।


ঠিক এক বছর পর লোকসভা নির্বাচন।  তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের সমস্ত বিজেপি দলগুলির সাথে মোদী সরকারকে উৎখাত করার জন্য প্রচুর শব্দ করছেন এবং এমন সময়ে নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত তৃণমূল কংগ্রেসকে হতাশ করেছে।  দলের নেতারা বলছেন যে নিয়ম অনুসারে, ২০২৪ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ পরপর দুটি লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত তাঁর পদবী অক্ষত থাকা উচিৎ ছিল।  এরপর শর্ত পূরণ না হলে কমিশন পরবর্তী বিধানসভা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারত।  ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর পরের বছর অনুষ্ঠিতব্য বিধানসভাগুলিতে শর্তগুলি পূরণ না হলে, স্বীকৃতি প্রত্যাহার করা যেতে পারে।  কিন্তু এ ব্যাপারে কমিশন 'চোড়া তৎপরতা' দেখিয়েছে।  দলের সাংসদ সৌগত রায়ও সোমবার এ বিষয়ে আইনের দরজায় কড়া নাড়বেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।



 কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষক পার্থ মুখোপাধ্যায় বলছেন, এই বছর যে রাজ্যগুলিতে নির্বাচন হওয়ার কথা, সেখানে এমন কোনও রাজ্য নেই, যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের অবস্থানের উন্নতি করতে পারত, কিন্তু লোকসভার আগে তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে তার জাতীয় দলের মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে। মাঠ পর্যায়ে এর কোনও প্রভাব পড়বে না, তবে এর রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।  পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পর জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  এর আগে বিভিন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের কারণে ধাক্কা লেগেছিল।  এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বিরোধী দলগুলিকে একত্রিত করার কৌশল বদল করে প্রথমে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেসকে আলাদা করে রেখেছিলেন এবং এখন কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েছিলেন এবং বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ও দূরত্বের অভিযোগে তার বিশ্বাসযোগ্যতা নড়বড়ে হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে তার জাতীয় রাজনীতির স্বপ্ন আবারও ধাক্কা খেয়েছে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad