আবাস পেতে শাসককে দিতে হয় কাটমানি! বিস্ফোরক দেবের ভাই
নিজস্ব প্রতিবেদন, ২৯ এপ্রিল, পশ্চিম মেদিনীপুর: তৃণমূল নেতাদের কাটমানি না দিয়ে সরকারি যোজনার অন্তর্গত আবাস পাওয়া যায় না, এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ দেবের ভাই বিক্রম অধিকারী। তাঁর এই অভিযোগে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। ব্লক তৃণমূল সভাপতি বলেন, সাংসদের ভাইয়ের এই অভিযোগ খুবই গুরুতর, দল এর তদন্ত করছে।
টলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা দীপক অধিকারী ওরফে দেব তিনি তৃণমূলের টিকিটে জেতা জনপ্রতিনিধিও। সংসদের বর্তমান ঠিকানা দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত আবাসন হলেও আদতে তিনি কেশপুরের মহিষদা গ্রামের ছেলে। সেই গ্রামে এখনও রয়েছেন দেবের জ্যেঠুর পরিবার। দেবের জ্যেঠুর এক ছেলের নাম বিক্রম অধিকারী, তিনিই এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন।
বিক্রম অধিকারীর দাবী, আবাস যোজনার বাড়ি নিতে তাকে কাটমানি দিতে হবে। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানান, ২০১৬ সালে সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পের অধীনে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য হয়েও, স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের টাকা দিতে হয়েছে। ফলে তখন তার পক্ষে বাড়ি বানানো সম্ভব ছিল না।
এর পরে, তৃণমূল সাংসদের ভাই স্থানীয় বিধায়ক শিউলি সাহাকে অভিযোগ করেন যে, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের জানানো সত্ত্বেও কোনও সমাধান পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, বারবার অনুরোধ করেও তার সমস্যার সমাধান হয়নি। এদিকে, একবার আবাসন প্রকল্পের তালিকায় তার নাম উঠে গেলে রং পরবর্তীতে তিনি আর বাড়ি পাননি। বারবার অনুনয়-বিনয় ও টাকা না পাওয়ায় বিক্রম অধিকারীকে তার পরিবারের সাথে একটি জরাজীর্ণ বাড়িতেই থাকতে হয়।
শুধু তাই নয়, বিক্রম অধিকারীর আরও অভিযোগ, এলাকায় সমস্যা সমাধানের নামে বিভিন্ন সালিশি সভায় তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাঁকে সামনে রেখে দেবের ভাই পরিচয় দিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিভিন্ন বিবাদের মধ্যস্থতা করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা।
তবে দেবের ভাইয়ের দাবী, এসব অভিযোগের কোনওটিই অভিনেতা তথা সাংসদ দেবের কানে পৌঁছায়নি। কেশপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রদ্যোৎ পাঁজা দাবী করেন, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বিধায়ক শিউলি সাহা বলেন, 'নির্দিষ্ট প্রমাণ দিয়ে থানায় অভিযোগ করুক। প্রশাসনকে বলব, অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে ব্যবস্থা নিতে।' পাশাপাশি তিনি বলেন দল কোনও অন্যায়কে সমর্থন করেন না। তবে, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত না হলে তাকে শাস্তি পেতে হবে বলেও কার্যত হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
No comments:
Post a Comment