কিভাবে ভালো রাখবেন শিশুদের দৃষ্টিশক্তি,জেনে নিন উপায় - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 12 April 2023

কিভাবে ভালো রাখবেন শিশুদের দৃষ্টিশক্তি,জেনে নিন উপায়


আমরা শিশুদের যে ধরনের খাবার দিই তা তাদের চোখকেও প্রভাবিত করে কারণ খাবারে পুষ্টির উপস্থিতি চোখের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।  শিশুদের সঠিক পুষ্টি প্রদান করলে চোখে ভালো প্রভাব পড়ে।

শিশুদের দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ করার জন্য আমাদের শিশুর খাদ্য তালিকায় ভিটামিন, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শিশুদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে দিতে হবে।  তাদের প্রতিদিন স্যালাড, ফল দিতে হবে। আসুন আমরা এমন কিছু খাবারের বিষয়ে জেনে নেই যেগুলো শিশুদের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

শিশুদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করার জন্য খাবার :

গাজর -

যখনই দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির কথা আসে, প্রথমেই যে খাবারের নামটি আসে তা হল গাজর। এটি চোখের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য। এতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন যা চোখের পেশির অবক্ষয় রোধ করতে খুবই প্রয়োজনীয়।

গাজর ছাড়াও কমলা, লেবু এবং সাইট্রাস ফল ভিটামিন বি১২ এবং বিটা ক্যারোটিনের ভালো উৎস, যা শিশুর  দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে কাজ করে। আপনি আপনার শিশুকে গাজরের রসও দিতে পারেন। এটিও চোখের জন্য খুব ভালো বলে মনে করা হয়। গাজরের রসে রয়েছে ভিটামিন-এ যা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে খুবই উপকারী। তাই প্রতিদিন শিশুকে এক গ্লাস গাজরের জুস দিতে হবে।

আমলকি -

আমলকি ভিটামিন এ, সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এটি চোখের যত্ন নেওয়ার জন্য দুর্দান্ত।  আমলকি রেটিনার কোষগুলির সমস্ত কার্যকারিতা নিশ্চিত করে।  আপনি অনেক উপায়ে আপনার শিশুকে আমলকি খাওয়াতে পারেন।

আমলকির রস করে আধা কাপ জলে দুই থেকে তিন চামচ রস মিশিয়ে আপনার সন্তানকে দিন। এছাড়াও আপনি আমলকির আচার, মোরব্বা বা এর রস মধুর সাথে মিশিয়েও দিতে পারেন। প্রতিদিন এটি দিলে কয়েক মাসের মধ্যেই শিশুদের দৃষ্টিশক্তি প্রখর হয়ে উঠবে।

আমন্ড -

আমন্ডে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি পাওয়া যায়। এটি খাওয়া শিশুদের জন্য অনেক উপকারী।  এর মধ্যে একটি হল দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ করা, কারণ এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়।  এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।  দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি এটি স্মৃতিশক্তি ও একাগ্রতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

এর জন্য আমন্ড সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে এর খোসা ছাড়িয়ে পিষে নিন এবং তারপর দুধে মিশিয়ে আপনার শিশুকে খাওয়ান। এছাড়াও আমন্ডে মৌরি ও চিনি মিশিয়ে  গুঁড়ো তৈরি করুন এবং রাতে ঘুমানোর আগে গরম দুধে এক চামচ মিশিয়ে আপনার শিশুকে দিন। প্রতিদিন এটি খেলে শিশুদের দৃষ্টিশক্তি শীঘ্রই প্রখর হবে, কারণ এতে প্রচুর পুষ্টি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।

শুকনো ফল এবং বাদাম -

শুকনো ফল এবং বাদামও চোখের জন্য খুবই উপকারী।  শুকনো ফল যেমন কাজু, পেস্তা, আখরোট, চিনাবাদাম এবং কিশমিশও খুব উপকারী।  এগুলিতে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে যা চোখের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে এবং দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে কাজ করে।  অতএব, আপনার সন্তানের খাদ্যতালিকায় এদের অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না।

সবুজ শাক-সবজি -

দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে, আপনাকে অবশ্যই আপনার শিশুকে সবুজ শাক-সবজি যেমন পালং শাক, বিটরুট, মিষ্টি আলু, অ্যাসপারাগাস, ব্রোকলি ইত্যাদি খাওয়াতে হবে। সবুজ শাক-সবজি সবার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী হলেও পালং শাক ভিটামিনের ভালো উৎস। এছাড়া পালং শাকে ভিটামিন এ, আয়রন, জিঙ্কের মতো খনিজ উপাদানও পাওয়া যায়।

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, যেমন- লুটেইন এবং জেক্সানথিন, যার কারণে পালং শাক আমাদের শিশুদের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করার পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রোগও নিরাময় করে। এই জন্য, আপনার শিশুদের খাদ্যতালিকায় পালং শাক অন্তর্ভুক্ত করা আবশ্যক। পালং শাকের সাথে গাজর, আমলা এবং টমেটোও ব্যবহার করতে পারেন। এই সব কিছু মিশিয়ে রস তৈরি করে শিশুদের দিন। এটি তাদের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে।

মিষ্টি আলু -

দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ করার জন্য গাজরের পাশাপাশি মিষ্টি আলুর নামও আসে। এটিও গাজরের মতো বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ। এর সাথে এতে ভিটামিন-সি এবং ফাইবারও পাওয়া যায়, যা চোখকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এর পাশাপাশি এটি ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরামত করে। আপনি মিষ্টি আলু অলিভ অয়েলে ভেজে বা দুধ ও চিনি দিয়ে তৈরি করে শিশুকে খাওয়াতে পারেন। এটিও আপনার শিশুর দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে অনেক সাহায্য করবে।

মাখন -

শিশুদের দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ করার জন্য, শিশুকে এক কাপ উষ্ণ দুধে এক-চতুর্থাংশ চামচ মাখন, আধা চামচ লিকারিস পাউডার এবং এক চামচ মধু ভালো করে মিশিয়ে খেতে দিতে হবে। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে শিশুদের এটি দিন। এতে তাদের দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ হবে। গরম দুধে দুটি ছোট এলাচের গুঁড়োও মিশিয়ে নিতে পারেন। এটি শিশুদের চোখ সুস্থ রাখতে এবং দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ রাখতেও সাহায্য করবে।

ব্রকলি -

স্বাস্থ্যের দিক থেকেও ব্রকলিকে খুবই উপকারী মনে করা হয়।  এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন-এ শরীরের সমস্ত চাহিদা পূরণ করে। তাই আপনার শিশুর ডায়েটে অবশ্যই ব্রকলি অন্তর্ভুক্ত করুন। চোখের জন্য আপনি এটি তাদের স্যালাড আকারে দিতে পারেন বা সেদ্ধ করেও দিতে পারেন।

ডিম -

ডিম দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। ডিমের হলুদ কুসুমে অনেক পুষ্টিকর উপাদান পাওয়া যায়, যা চোখকে সুস্থ রাখতে এবং জ্যোতি বাড়াতে সাহায্য করে।

জাম (ব্ল্যাকবেরি) -

অনেক ধরনের ফলও রয়েছে যা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে কাজ করে। যেমন আপেল, কমলা ইত্যাদি।  জাম সেসব ফলের মধ্যে একটি, যেগুলো গ্রীষ্মকালে কালো লবণ মিশিয়ে মানুষ খুব আনন্দের সাথে খায়। জাম যেমন সুস্বাদু তেমনি দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে।  এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি পাওয়া যায় যা চোখের জন্য উপকারী।

চোখের যত্ন কেন গুরুত্বপূর্ণ -

চোখ আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এবং এই চোখের মাধ্যমে আমরা এই সুন্দর পৃথিবী দেখতে পারি। শুধু তাই নয়, এটি আমাদের সৌন্দর্যও বাড়িয়ে দেয়। সুন্দর চোখ আমাদের আলাদা পরিচয় দেয়।  এ জন্য আমাদের শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখার পাশাপাশি আমাদের চোখের প্রতিও পূর্ণ যত্ন নেওয়া উচিৎ, কারণ স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে চোখও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বর্তমান সময়ের পরিবর্তিত জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে চোখ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এটি একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠছে। আজকাল শুধু বড়রাই নয়, ছোট শিশুরাও  চশমা পরে। বেশিরভাগ শিশুই কম্পিউটার, ভিডিওগেম বা মোবাইল ফোনে সময় কাটায়, যার কারণে বয়সের আগেই শিশুদের দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের খাদ্যাভ্যাস উন্নত করা খুবই জরুরি।

বি.দ্র: এখানে দেওয়া তথ্য সাধারণ জ্ঞান ও ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে দেওয়া। প্রেসকার্ড নিউজ এটি নিশ্চিত করে না। কোনও নতুন কিছু শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞর পরামর্শ অবশ্যই নিন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad