গত মাসে দিল্লী-এনসিআর সহ গোটা উত্তর ভারত কেঁপে ওঠে শক্তিশালী ভূমিকম্পে। যদিও এই ভূমিকম্পে কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে জনমানসে। অনেকের মনেই ভাবনা আসে হঠাৎ আসা এই ভূমিকম্প বা এর মত অন্যান্য দুর্যোগের কথা যদি আগে থেকেই জানা যেত, তাহলে কিছুটা হলেও সতর্ক হওয়া যেত। তবে আর চিন্তা নেই, এখন থেকে এমন বিপর্যয় ঘটলে আপনার মোবাইল ফোনই সতর্ক করবে আপনাকে। কেন্দ্রীয়স সরকার এমার্জেন্সি অ্যালার্ট ফিচার বাধ্যতামূলকভাবে লাঘু করেছে। এজন্য মোবাইল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে ৬ মাস সময় দেওয়া হয়েছে। ব্রডকাস্ট সিস্টেমের মাধ্যমে মানুষকে এক সাথে আ্যালার্ট করার ফিচার থাকার ক্ষেত্রে, বিপদ আসতেই মোবাইল অ্যালার্ট বার্তা জারি করবে, যা কমপক্ষে ৩০ সেকেন্ডের হবে। দুর্যোগের অবস্থা, এলাকা, নাম এবং তীব্রতাও এই বার্তায় স্পষ্ট হবে।
বিশ্বের সব ধনী দেশে মোবাইল ফোনে ইমার্জেন্সি অ্যালার্ট ফিচার প্রয়োগ করা হয়। আমেরিকা, ইউরোপ, ব্রিটেন, জাপান, চীন, রাশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া সহ সকল দেশের ফিচার ফোনেও এই ব্যবস্থা প্রযোজ্য। কিন্তু ভারতে দামি মোবাইল হ্যান্ডসেটগুলি ছাড়া, এই বৈশিষ্ট্যটি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির তরফে ফোনে দেওয়া হয়নি। এটাও বলা যেতে পারে যে, ভারতে প্রচুর পাইরেটেড ফোন রয়েছে, যার কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যটিকে ক্রমাগত উপেক্ষা করা হয়েছে।
আমাদের দেশে প্রায় প্রত্যেকের কাছেই মোবাইল ফোন রয়েছে। এমনকি প্রতিটি বাড়িতে এক বা দুই বা তার বেশি মানুষের মোবাইল হ্যান্ডসেট রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বৃহৎ পরিসরে মানুষকে সতর্ক করার জন্য এর চেয়ে ভালো ব্যবস্থা আর নেই। ভারতে ১২০ কোটিরও বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী এবং ৬০ কোটিরও বেশি স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারী রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, এই বৈশিষ্ট্যটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হবে।
মোবাইল ফোনে অ্যালার্ট ফিচার এখন প্রতিটি ফোনেই লাগাতে হবে কোম্পানিগুলোকে। সেটা ১,৫০০ টাকার ফিচার ফোন হোক বা সস্তা স্মার্টফোন। বর্তমানে, এই বৈশিষ্ট্যটি ঐচ্ছিক অর্থাৎ জরুরি বৈশিষ্ট্যটি চালু বা বন্ধ রাখা ব্যবহারকারীর পছন্দের ওপর। তবে আগামী দিনে এটা বন্ধ করা যাবে না।
উদাহরণস্বরূপ, আপনার শহরের কোনও এলাকায়, একটি বড় জায়গায় জমি ধসে যায়। এই জায়গাটি হল যেখান দিয়ে হাইওয়ে ছুঁয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে, আপনি আগে থেকেই একটি অ্যালার্ট পেয়ে যাবেন যে, এটি ঘটেছে, তো আপনি সাবধান হয়ে যাবেন। বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও সুনামির ক্ষেত্রে মানুষ নিজেদের রক্ষার পদক্ষেপ করতে পারেন। যদিও ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে পূর্বাভাসের তথ্য দেওয়ার মতো কোনও মেশিন বা ব্যবস্থা নেই। কিন্তু ভূমিকম্প কোনও শহরে আঘাত হেনেছে এবং আপনি রাস্তায় আছেন, এমতাবস্থায়, অ্যালার্ট পেলে আপনি সাবধানে এগোবেন। এই ফিচারটির বিশেষত্ব হল এটি একই সাথে সমগ্র শহর, সমগ্র রাজ্য বা সমগ্র দেশকে সতর্ক করতে পারে।
সরকারের নির্দেশনা কী?
১. সরকার সমস্ত হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারকদের শুধুমাত্র এমার্জেন্সি অ্যালার্ট সিস্টেম সহ মোবাইল হ্যান্ডসেট বিক্রি করার নির্দেশ দিয়েছে৷
২. সমস্ত ফিচার ফোন এবং স্মার্টফোনে এই সুবিধা বাধ্যতামূলক করতে হবে৷
৩. হিন্দি-ইংরেজি বা রাজ্য সম্পর্কিত ভাষায় এমার্জেন্সি অ্যালার্টের সুবিধা থাকতে হবে।
৪. পালন করার জন্য কোম্পানিগুলিকে ৬ মাস সময় দেওয়া হয়৷
৫. পুরনো স্মার্টফোনেও সফ্টওয়্যার আপডেট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৬. এমার্জেন্সি অ্যালার্ট ছাড়া মোবাইল হ্যান্ডসেট বিক্রি হবে বন্ধ।
No comments:
Post a Comment