অবৈধ বালি পাচার কাণ্ডে নাম জড়ালো মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের। অভিযোগ, ফুলহার নদী থেকে প্রকাশ্যে চলছে বালি কাটার কাজ, পাচার হয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য বিহারে, সরব স্থানীয়রা, তৃণমূলের মদতে বালি মাফিয়াদের বাড়বাড়ন্ত, অভিযোগ বিজেপির, পাল্টা সাফাই তৃণমূলের, তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।
বর্তমান সময়ে এই মুহূর্তে বালি, কয়লা ও গরু পাচার কাণ্ডে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বালি পাচার কাণ্ডে বারবার নাম উঠে এসেছে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বীরভূমের। যে অনুব্রত এই মুহূর্তে তিহাড়ে। এবারে অনবরত অবৈধ ভাবে বালি পাচারের অভিযোগ উঠছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে। অভিযোগ, রবিবার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গোবিন্দপুর ঘাটে ফুলহার নদী থেকে প্রকাশ্যে চলে বালি কাটার কাজ। রাতের অন্ধকারে শ্রমিকদের দিয়ে বালি কাটার কাজ করাচ্ছে বালি মাফিয়ারা। স্থানীয়দের নজর এড়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে না জেসিবি। সেই বালি চলে যাচ্ছি স্থানীয় অবৈধ টাইগার সহ অন্যান্য ইটভাটা গুলোতে। সেখান থেকে বিহারে পাচার হয়ে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।
প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এই ভাবে বালি এবং মাটি কাটা চলতে থাকলে গ্রামের মধ্যে নদী ঢুকে যাবে। এদিকে সমগ্র ঘটনায় তৃণমূলের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। যদিও অভিযোগ নস্যাৎ করে তৃণমূলের দাবী, অবৈধ ভাবে বালি কাটা হলে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।
স্থানীয় বাসিন্দা বিমল মণ্ডল, পেশায় ট্রাক চালক বলেন, 'এইভাবে বালি ও মাটি কাটায় ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে নদী গ্ৰামে ঢুকে যাবে।' তার অভিযোগ, এতে প্রশাসনেরও মদত রয়েছে। যে টাকা দিচ্ছে, সেই অনুমতি পেয়ে যাচ্ছে।
ফুলহার নদী থেকে এই অবৈধ ভাবে বালি পাচার নিয়ে তৃণমূলকেই বিঁধেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের অপর নামই চোর। খাদান, বালি, পাথর, চাকরি কি না চুরি করেছে এরা! এখন গোবিন্দপুর ঘাটে জেসিপির পরিবর্তে নতুন প্রকল্প চালু করেছে। যারা শ্রমিক শ্রেণীর লোক, ভোর বেলায় তাদের দিয়ে বালি কাটিয়ে পাচার করা হচ্ছে।'
অনুব্রতকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। বিজেপি নেতা বলেন, বীরভূমে বালি পাচারের ক্ষেত্রে যিনি বিখ্যাত ছিলেন, তিনি তো এখন তিহাড়ের ভাত খাচ্ছেন।' তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, 'সিপিএম যেভাবে ডাকাতি শুরু করেছিল এরা ডাকাতের সর্দার হয়ে গেছে। জনসাধারণ এদের ডাস্টবিনে ফেলবে।' তাঁর দাবী, এই বালি কাটার পেছনে তৃণমূলের প্রত্যক্ষ মদত আছে।
অপরদিকে বিজেপির এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। বালি কাটা ও পাচার সম্পর্কে তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, 'আমি এটা সংবাদমাধ্যমের থেকেই শুনলাম। অভিযোগ কতটা সত্য, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব। অভিযোগ সত্যি হলে প্রশাসনকে বলব সঠিক তদন্ত করে, দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে। তিনি এও বলেন, এতে দলের কেউ জড়িত থাকলেও দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।'
জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, তদন্তের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হবে।
No comments:
Post a Comment