মর্গেই পড়ে মৃতদেহ, অসুস্থ স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করেই বেপাত্তা স্ত্রী

মর্গেই পড়ে মৃতদেহ, অসুস্থ স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করেই বেপাত্তা স্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনার, ২৫ এপ্রিল: অসুস্থ স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করে বেপাত্তা স্ত্রী, হাসপাতালেই মারা গিয়েছেন স্বামী, ছয় দিন ধরে হাসপাতাল মর্গেই রয়েছে স্বামীর দেহ, কিন্তু খোঁজ নেই মৃতের স্ত্রী এবং আত্মীয় পরিজনের। কে বা কারা করবে মৃতদেহের সৎকার? বিপাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনার। 

একদমই অজ্ঞাত পরিচয় বলা যাবে না কারণ নাম পরিচয় দিয়েই হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন অসুস্থ স্বামীকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ১৯ তারিখ দুপুরে জেলার বিরা জয়পুলের বাসিন্দা অঞ্জু পাল 'স্ত্রী' পরিচয় দিয়ে ষাটোর্ধ অসুস্থ স্বামী বাবু পাল নামে এক ব্যক্তিকে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।ওই দিন বিকেলেই তার স্বামী বাবু পাল হাবড়া হাসপাতালে মারা যান। কিন্তু ব্যক্তির মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী বা কোনও আত্মীয় পরিজনের সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃতের পরিবারের কোনও সন্ধান না মেলায় ছ'দিন ধরে মৃত দেহ রাখা রয়েছে হাবড়া হাসপাতাল মর্গে।

হাবড়া হাসপাতালের সুপার বিবেকানন্দ বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে জানিয়েছেন, স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে অঞ্জু দেবী তার স্বামী বাবু পালকে পায়ে পচন ধরা অবস্থায় হাবড়া হাসপাতাল নিয়ে এসেছিল, সঙ্গে সঙ্গে ভর্তিও করে নেওয়া হয়। ডকুমেন্টস না আনলে যে চিকিৎসা শুরু হবে না তাতো নয়, তাই নাম পরিচয় নিয়েই তড়িঘড়ি রুগীকে ভর্তি করানো হয়, এমনকি ছিল না কোনও ফোন নাম্বার।

ইতিমধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিরা জয়পুল এলাকার পার্শ্ববর্তী হাবড়া থানা এবং দত্তপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করেও ওই এলাকায় ওই নাম পরিচয়ের কারও খোঁজ মেলেনি। এমনকি বিষয়টি জানানো হয়েছে মহাকুমা শাসককে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিভাগে বিষয়টি জানানো হয়েছে। যেহেতু নাম পরিচয় দিয়েই রুগীকে ভর্তি করা হয়েছিল সেহেতু মৃত ব্যক্তিকে অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিও বলা যাবে না এমনকি এই মুহূর্তে করা যাবে না মৃতদেহের সৎকার।

এই ঘটনায় যে চরম বিপাকে পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একপ্রকার সেই কথা স্বীকার করে নিয়ে হাবড়া হাসপাতাল সুপার বিবেকানন্দ বিশ্বাস মৃত ব্যক্তির চেহার বিবরণ দেওয়ার পাশাপশি বলেন, 'আমরা চাই পরিবারের লোকজন এসে মৃতদেহ নিয়ে যাক।' এমনকি কে বা করা বাবু পালকে হাসপাতালে নিয়ে এলেন সেটা জানতে হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন সুপার। তাহলে কি এর পিছনে কোনও রহস্য আছে? বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তির সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কি ইচ্ছাকৃত ভুল ঠিকানা দেওয়া হয়েছে? ঘুরপাক খাচ্ছে এমন হাজারও প্রশ্ন।